মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। তবে ওই ম্যাচে মহেন্দ্র সিং ধোনি ‘ফিনিশার’-এর ভূমিকায় দেখা দেওয়ার কারণেই সাফল্য পেয়েছিল দলটি। এবার অবশ্য ধোনি পারেননি। ব্যাট হাতে ঝড় তুলে প্রায় একাই লড়াই চালিয়ে যাওয়া আম্বাতি রাইডুও পারেননি সাবেক চ্যাম্পিয়নদের জয়ের মুখ দেখাতে। বরং তাদের হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় উন্নতি হয়েছে পাঞ্জাব কিংসের।
২০২২ আইপিএলের ৩৮তম ম্যাচে সোমবার মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ১১ রানের জয় তুলে নিয়েছে পাঞ্জাব। শুরুতে ব্যাট করে তারা ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৭ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে। জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রানে থামে চেন্নাইয়ের ইনিংস। এই নিয়ে ৮ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে উঠে এলো পাঞ্জাব। সমান ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে চেন্নাই। শীর্ষে থাকা গুজরাট টাইটান্সের সংগ্রহ ৭ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার রবিন উত্থাপ্পার (১) উইকেট হারিয়ে বসে চেন্নাই। এরপর পাঞ্জাবের পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে রান তুলতে রীতিমত হিমশিম খেয়েছেন তিনে নামা মিচেল স্যান্টনার (৯)। এরপর শিভম দুবেও (৮) যখন ফিরে গেলেন, ৪০ রানেই তখন ৪ উইকেট নেই চেন্নাইয়ের। এরপর থেকেই রুতুরাজকে (৩০) নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু হয় রাইডুর। দুজনের জুটিতে আসে ৪৯ রান। এরপর জাদেজাকে নিয়ে রাউডু যোগ করেন আরও ৬৪ রান। কিন্তু তখনও লক্ষ্য অনেক দূর।
ধুঁকতে থাকা চেন্নাই মূলত ঘুরে দাঁড়ায় ১৫তম ওভারে। ওই ওভারে আসে ১৫ রান। এর মধ্যে ওভারের তৃতীয় বলে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটির (২৮ বলে) দেখা পান রাইডু। শেষ ৫ ওভারে চেন্নাইয়ের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭০ রান। ১৬তম ওভারে ৩ ছক্কা ও ১ চার হাঁকান রাইডু। তাতে সন্দ্বীপ শর্মার ওই ওভারে আসে ২৩ রান। কিন্তু পরের ওভারে আর্শদীপ সিং মাত্র ৬ রান খরচ করায় ১৮ বলে চেন্নাইয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ রান।
১৮তম ওভারে কাগিসো রাবাদাও ঠিক ৬ রানই খরচ করেন এবং সেই সঙ্গে ওভারের পঞ্চম বলে বোল্ড করে ফেরান রাইডুকে। বিদায়ের আগে ৩৯ বলের মোকাবিলায় ৭ চার ও ৬ ছক্কায় ৭৮ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন রাইডু। এরপর ক্রিজে আসেন আগের ম্যাচে দারুণ ‘ফিনিশিং’ দেওয়া ধোনি। কিন্তু শেষ ২ ওভারে তাদের সামনে তখন ৩৫ রানের লক্ষ্য। ধোনি ও অধিনায়ক রবিন্দ্র জাদেজা মিলে ১৯তম ওভারে তুলতে পারেন ৮ রান।
জিততে হলে চেন্নাইকে শেষ ওভারে ২৭ রান তুলতে হতো। অবিশ্বাস্য এই লক্ষ্য পেরোতে গিয়ে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান ধোনি। আরও একবার ‘ফিনিশার’ ধোনির দেখা অবশ্য মেলেনি। কারণ পরের বলে কোনো রান নিতে পারেননি তিনি। আর তৃতীয় বলে জনি বেয়ারস্টোর হাতে তুলে দিয়ে ফিরলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে ৮ বলে ১২ রান করেছেন তিনি। এরপর ডোয়াইন প্রোটিয়াস সিঙ্গেল নিয়ে জাদেজাকে স্ট্রাইক দিলে ছক্কা হাঁকান চেন্নাই অধিনায়ক। কিন্তু শেষ বলে দরকার ছিল ১৩ রান। জাদেজা নিতে পারেন ১ রান। সবমিলিয়ে ওই ওভারে তারা তুলতে পারেন ১৫ রান। ফলে ১১ রানে হারতে হয় তাদের
এর আগে শিখর ধাওয়ানের ৪৯ বলে অপরাজিত ৮৮ রান ও ভানুকা রাজাপক্ষের ৩২ বলে ৪২ রানের ইনিংসে ভর করে বড় সংগ্রহ পায় পাঞ্জাব। ধাওয়ানের ব্যাট থেকে আসে ৯টি চার ও ২টি ছক্কা। অন্যদিকে রাজাপক্ষে হাঁকান ২টি করে চার ও ছক্কা। এছারা ওপেনার ও অধিনায়ক মায়াঙ্ক আগারওয়াল ২১ বলে ১৮ রান ও শেষদিকে লিয়াম লিভিংস্টোন খেলেন ৭ বলে ১৯ রানের ইনিংস।