কয়েকদিনের বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে তিস্তা চরের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে নদীর পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা চরের কয়েকশ’ একর জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ সূত্র জানায়, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের খালিশাচাপানী ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার (৫২.৬০) দশমিক ৫০ মিটার (৫২.১০) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকেল ৩টায় উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি পায় দশমিক ২০ মিটার। এতে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৫২.৩০ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। রোববার সন্ধ্যা ৬টার পর সেই পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করে।
ডালিয়া পয়েন্টে গেজ রিডার নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আমরা ভারতের দো-মহনী তিস্তা পয়েন্টে ওয়্যারলেন্সের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ভারতের দো-মহনী পয়েন্টে তারা হলুদ সংকেত জারি করেছে। তিস্তার পানি ভারতের ওই পয়েন্টেও বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা হলুদ সঙ্কেত ঘোষণা করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজানের পানি ও আষাঢ়ের বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, গোলমুন্ডা, শৌলমারী ও কৈমারী এলাকার তিস্তা নদীর চরসহ লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
তিস্তার ঝাড়শিঙ্গেশ্বর চরের কয়েকজন কৃষক জানান, পানিতে ধানের বীজতলা তলিয়ে গিয়ে বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বর্ষা মৌসুমে ধান রোপণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় সেখানকার কৃষকরা। এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) আব্দুল আল মামুন বলেন, উজানের পানি ও বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।