তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতি গতিশীল রাখতে হবে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার ভাব যেন আমাদের ওপর না আসে সেজন্য আমাদের সতর্ক হয়ে চলতে হবে। সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে, সঞ্চয়ী হতে হবে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঘোড়াউত্রা নদীর তীরে নবনির্মিত সেনানিবাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
এর আগে বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে মিঠামইন সেনানিবাসের হেলিপ্যাডে পৌঁছান। এ সময় তিনি রাষ্ট্রীয় অভিবাদন গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমি কাজ করে যাচ্ছি। গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ আর্থসামাজিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির পিতার লক্ষ্য সামনে নিয়ে তার আদর্শে আমরা চলছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ গড়ে তুলছি। এই বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। কোনো মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে না।
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তা আগের ২৯ বছরেও হয়নি। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকার কারণেই এমন উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সেনানিবাসে স্কুল হবে, কলেজ হবে, চিকিৎসা কেন্দ্র হবে। এরই মধ্যে রাস্তাঘাট করে দিয়েছি এবং নির্দেশ দিয়েছি যে, প্রতিটি হাওর অঞ্চল, বিল, জলাভূমি অঞ্চলে প্রতিটি রাস্তা হবে এলিভেটেড। এর ফলে বর্ষাকালে পানি চলাচল অব্যাহত থাকবে। মাছ চলাচলে ব্যাঘাত ঘটবে না। নৌকা চলাচল অব্যাহত থাকবে। আবার মানুষের যোগাযোগে সুবিধা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলাই ছিল জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রতিরক্ষা নীতিমালা করে দিয়ে যান। আমরা তারই ভিত্তিতে ফোর্সেস গোল্ড ২০৩০ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস করেছি। আমরা সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে সর্বত্র কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘মিঠামইন, অষ্টগ্রামসহ প্রতিটা হাওর অঞ্চল বর্ষাকালে ছোট ছোট দ্বীপের মতো হয়ে যায়। শীতকালে এটা বোঝার উপায় নেই। এখন দেখছি ফসলে ভরে গেছে, রাস্তা আছে, কিন্তু বর্ষাকালে ভিন্ন চেহারা। এই অঞ্চলের মানুষের প্রতিদিন জীবনযুদ্ধে লড়াই করতে হয়।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ, যিনি রাষ্ট্রপতি, তিনি এই অঞ্চল থেকে বার বার নির্বাচিত হয়েছেন। এই দুর্গম অঞ্চলে মানুষের পাশে থাকা, তাদের সুখ দুঃখের সঙ্গী হওয়া, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। তিনি যখন রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন তখন তিনি ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন এই অঞ্চলে একটা সেনানিবাস করার। তার উদ্দেশ্য হলো সেনানিবাস হলে এই অঞ্চলের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে। তার ইচ্ছা অনুযায়ী এই সেনানিবাসটা আমরা গঠন করেছি। তার নামেই সেনানিবাস উৎসর্গ করেছি।’