বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা নিয়ে সন্তুষ্ট নয় সরকার। কূটনীতিকদের তৎপরতা আরও বাড়তে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
বুধবার (৮ নভেম্বর) সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে অসন্তোষ জানান প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বিষয়টা আমরা পছন্দ করি না (কূটনীতিকদের তৎপরতা)। কিন্তু তারপরও আমরা তাদের একটা কালচারাল স্পেস দিয়েছি। এ কালচারটা বাংলাদেশে আছে অনেকদিন থেকে। কিন্তু আমরা চাই, সামনের দিনে তারা এ কালচার থেকে সরে আসবে। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশই নেবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, তফসিল ঘোষণা যেকোনো সময় হয়েই যাবে। এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে। এ সময়টা একটু ধৈর্য ধরার প্রয়োজন আছে। রাষ্ট্রদূত যারা আছেন তারা আমাদের অতিথি। তারা (বিদেশি দূতরা) যদি ভিয়েনা কনভেনশন না মানেন আমাদের রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব আছে। কোনো রাষ্ট্রদূত যতই সীমা লঙ্ঘন করুক না কেন, এটা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য কঠিন সেটা আমি জানি। কিন্তু সবারই আচরণ, অঙ্গভঙ্গি এমনকি লেখালেখিও সহনীয় হওয়া প্রয়োজনীয় আছে।
তফসিল ঘোষণার আগে তৎপর রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠাবে কি না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা অতীতে কিছু রাষ্ট্রদূতকে একা ডেকে কার্যপরিধির বিষয়টা স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। চলতি মাসে তাদের সঙ্গে যে যোগাযোগ আমার মনে হয় নির্বাচনের আগে তারা সতর্ক থাকবেন। কারণ ছয় মাস আগে যে কথাটা বলেছেন, আজকে যদি তারা সেটার পুনরাবৃত্তি করেন সেটার প্রভাব কিন্তু আরও বেশি হবে। কারণ এখন সবাই নির্বাচনের মুডে গেছে। যারা আন্দোলন করছেন, (বিএনপি) তাদের ভাষায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছেন।
রাষ্ট্রদূতের কর্মকাণ্ডের জন্য তাদের ডেকে পাঠানোর প্রয়োজন পড়বে না বলে বিশ্বাস করেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, আমি মনে করি না সেটার প্রয়োজন হবে। যদি প্রয়োজন হয় সেটা হবে দুঃখজনক। যখন আমাদের হাতে আর কোনো অপশন থাকবে না, তখন কী করতে হবে, তা আমাদের জানা আছে।
বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা নিয়ে সরকার চাপ মনে করেন না বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। পাশাপাশি বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিদেশি দূতদের নিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মন্তব্যের ব্যাপারে সতর্কতার বার্তা দিয়েছেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, আমি অনুরোধ করব সব রাজনৈতিক দলের কর্মীদের, তারা যেন আমাদের কাজে সহায়তা করেন। এমন কোনো কমেন্ট যেন তারা না করে। আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের (দূতদের) ব্যত্যয়গুলো ধরিয়ে দেওয়ার। তাদের (দূতদের) সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করার বা কোনো কিছু সমস্যা হলে আলোচনা করার। আমরা প্রক্রিয়া জানি। একজন সাধারণ রাজনৈতিক কর্মী এ বিষয়গুলো জানবেন না বা বুঝবেন না।