১৯৭১ থেকে ২০২২, বিজয়ের ৫১ বছরে বদলে গেছে রক্তে কেনা বাংলাদেশ। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানা সূচকে এ দেশের সফলতা ঈর্ষণীয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, উন্নয়নের পাশাপাশি বৈষম্য আর দুর্নীতি হ্রাস এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। সেজন্য দায়িত্বশীল গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চার তাগিদ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল পাঁচ দশক। বন্যা খরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ এখন দুর্যোগ মোকাবেলায় রীতিমত রোল মডেল। একাত্তরে সাত কোটি মানুষ বেড়ে এখন ষোলো কোটিরও বেশি। বিশাল এ জনগোষ্ঠীর মৌলিক খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে এদেশেই। বিশ্বজুড়ে সমাদৃত এদেশের পোশাক, বিদেশিদের কাঙ্ক্ষিত ব্র্যান্ড মেইড ইন বাংলাদেশ। সার্বজনীন শিক্ষার আওতায় দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ, বেড়েছে গড় আয়ু ও মাথাপিছু আয়। নারীর ক্ষমতায়ন আর চরম দারিদ্র্য হ্রাসেও অনন্য সফলতা এ দেশের।
বিশ্ব ব্যাংক ঢাকা অফিসের পরামর্শক ড. জাহিদ হোসেন বলেন, প্যানডেমিক এলো তারপর মূল্যস্ফীতি। এরপরেও হতদরিদ্রের সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে। ৮৫ শতাংশ দারিদ্র্য থেকে ১২-১৫ শতাংশে নিয়ে আসা একান্ন বছরে এটা একটা বড় অর্জন। শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, জনসংখ্যা বিচারের দিক থেকে বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে আমরা মোটামুটি সচ্ছল আছি। কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে যে লাভটুকু হয়েছে আমাদের তা অনেকটাই আড়ালে পড়ে যাচ্ছে বৈষম্যের কারণে।
এতো সব অর্জনের পরও বহু চ্যালেঞ্জ। শিক্ষা ও অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেড়েছে বৈষম্য। দুর্নীতি আর টাকা পাচারের মতো ঘটনায় প্রশ্নবিদ্ধ বহু ইতিবাচক অর্জন। সেই সাথে রাজনীতির নানামুখী চ্যালেঞ্জ বিশেষ করে টেকসই নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে বড় দলগুলোর টানাপড়েন এখনো বড় সমস্যা।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আরও বলেন, দুর্নীতির কারণে দেশ থেকে বহু অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে। সেই অর্থ যদি আমাদের দেশে থাকতো তাহলে বিনিয়োগ হতো। আমি চাই শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ুক। আর কৃষক শ্রমিকদের অভুক্ত রেখে কোনোদিন কোনো উন্নয়ন হবে না। বৈশ্বিক সংকট করোনা নিয়ে নানা আশঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা ভালোভাবেই সামলেছে বাংলাদেশ। রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ ও চলমান বিশ্বমন্দায় চ্যালেঞ্জ কতটা সফলভাবে মোকাবেলা করা যায়, সেদিকে তাকিয়ে দেশের কোটি মানুষ।