বিএনপি রাজধানীতে ঢাকঢোল পিটিয়ে বিজয় র্যালি করেছে । মহান বিজয় দিবস ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এ আয়োজন করা হয়। র্যালি থেকে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিও চাওয়া হয়।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে রোববার দুপুর আড়াইটার পর অস্থায়ী মঞ্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে র্যালির উদ্বোধন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এরপর কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে র্যালি শুরু হয়। বিকেল চারটার কিছুক্ষণ পর এটি শেষ হয়।
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে কাকরাইল, শান্তিনগর মোড় ঘুরে ফকিরাপুল হয়ে কার্যালয়ের সামনেই শেষ হয়। র্যালির সামনের অংশে ছিলেন মহিলা দলের নেত্রীরা। সংগঠনটির নেতাকর্মীদের পরনে ছিল লাল-সবুজ শাড়ি। শেষ অংশের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন।
ঢাকা মহানগর বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, তাঁতী দল, কৃষক দল ও ওলামা দলসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। র্যালি চলাকালে সড়কের দুপাশেই যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। যানবাহন না পেয়ে অনেক পথচারীকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতেও দেখা যায়। র্যালি কেটে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সকে চলাচল করতে দেখা গেছে।
বিএনপির বিজয় র্যালি পরিণত হয় খালেদা জিয়ার মুক্তির মিছিলে। এতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের মাথায় ছিল লাল-সবুজ ক্যাপ, হাতে ছিল জাতীয় পতাকা এবং বিএনপির দলীয় পতাকা। অনেক নেতাকর্মীর গায়ে ছিল কালো কাপড় এবং গলায় ছিল প্রতীকী শিকল।
র্যালির সামনের দিকে খালেদা জিয়া, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বড়-বড় ছবি প্রদর্শন করা হয়। অনেক নেতাকর্মীই খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন। র্যালিতে পিকআপ-ভ্যান থেকে শাহনাজ রহমত উল্লাহর গাওয়া বিএনপির দলীয় সংগীত প্রথম বাংলাদেশ… শেষ বাংলাদেশ গানটি বাজানো হয়।
র্যালি শেষে দলীয় নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ লাখো মানুষের এই মিছিল প্রমাণ করেছে, এ দেশের মানুষ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত দেখতে চায়। তাকে অবিলম্বে সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে চায়। এটিই দেশের মানুষের দাবি। দেশের মানুষ আজ প্রমাণ করেছে, তারা গণতন্ত্র চায়; স্বৈরতন্ত্র চায় না। দেশের মানুষ কথা বলতে চায়। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র সুসংহত করার জন্য আমরা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও লড়াই চালিয়ে যাব।
বৃহত্তর আন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, আজ বিজয় মিছিলের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয়ের যাত্রা শুরু হলো। স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, শেখ হাসিনাকে পরাজিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে জনগণের সরকার আমরা গঠন করব। এই আমাদের অঙ্গীকার।
র্যালির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ র্যালি বাংলাদেশের মানুষের জন্য নতুন করে সংগ্রাম শুরু করার, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার র্যালি। এর মধ্য দিয়ে সেই শুভ সূচনা হলো, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারব, তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারব। সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পায়ে হেঁটে র্যালিতে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির নেতা শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, আমান উল্লাহ আমান, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।