পূর্ববিরোধের জেরে আদালতের পাশে নিজ চেম্বার থেকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে। অপহরণে ব্যর্থ হয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে মারধর করে। এতে সাখাওয়াত হোসেন বাঁ চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হন। তার চিৎকার শুনে অন্য আইনজীবীরা এগিয়ে এলে অপহরণচেষ্টাকারীরা পালিয়ে যায়। তবে অপহরণের পরিকল্পনাকারী শহীদ সারোয়ার নামের এক আইনজীবীকে আটক করে গণধোলাই দেন অন্য আইনজীবীরা। শহীদ সারোয়ার একসময় অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের জুনিয়র ছিলেন।
বুধবার দুপুরে ওই ঘটনা ঘটলেও সাখাওয়াত হোসেন খান এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ায় ঘটনাটি প্রকাশ পায়নি। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার এটি প্রকাশ পেলে আদালত প্রাঙ্গণে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন ঘটনার পর চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতেই বিশ্রামে রয়েছেন। আর অভিযুক্ত শহীদ সারোয়ার নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছিলেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত অ্যাডভোকেট আনোয়ার প্রধান বলেন, বুধবার দুপুরে তিনি আদালতের দক্ষিণ পাশে তার চেম্বারে অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানও তার চেম্বারের পাশে চেম্বার নেন। দুপুরে হঠাৎ করেই তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে নিজের চেম্বার থেকে বাইরে উঁকি দিয়ে দেখেন, অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনকে সাত-আটজন লোক মারতে মারতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখে তিনি দ্রুত তার চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসেন এবং অন্য আইনজীবীদের খবর দেন। তারা এগিয়ে এলে অপহরণচেষ্টাকারী দলের সাতজন সঙ্গে নিয়ে আসা লাল রঙের একটি মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় আটক একজনের মুখের মাস্ক খুলে দেখতে পান তিনি অ্যাডভোকেট শহীদ সারোয়ার। শহীদ এর আগে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াতেরই জুনিয়র ছিলেন। ওই সময় ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা শহীদ সারোয়ারকে মারধর করেন।
এ বিষয়ে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, শহীদ সারোয়ার একসময় তার জুনিয়র হিসেবে কাজ করেছেন। কারও প্ররোচনায় সে ভুল করে থাকতে পারে। ঘটনার পর অন্য আইনজীবীদের উপস্থিতিতে মুচলেকা দেওয়ায় তিনি এ ব্যাপারে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেননি। ঘটনার পর থেকেই শহীদ সারোয়ারের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। এ কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।