প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে নোংরা ভাষা ব্যবহার করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে বলে বিএনপি নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বেয়াদবির জন্য বিএনপি নেতাদের তালিকা ধরে ধরে জবাব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
আওয়ামী লীগকে বটবৃক্ষের সঙ্গে তুলনা করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা সম্ভব না।’
বিএনপির ঢাকার সমাবেশের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছিল। দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি।’
বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের পদত্যাগ একটা ভুল সিদ্ধান্ত। এর জন্য তাদের নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে এনেছেন। তাদের জন্য সংসদ অচল হয়ে যাবে না।’
বিএনপির ঘরে গণতন্ত্র নেই দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণতন্ত্র শুধু আওয়ামী লীগের ভেতর আছে, বিএনপির ঘরে নেই গণতন্ত্র, তারা কীভাবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। তাদের বলতে চাই, তাদের দলের সম্মেলন কবে হয়েছে। এ দলের জাম্বু-জেড মার্কা কমিটি কবে হয়েছে, কয়টা মিটিং হয়েছে। বিদেশিদের বলি তারা কেন জিজ্ঞেস করে না? তারা কীভাবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।’
কিছু বিদেশি দূতাবাসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন হন। ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আমি প্রশ্ন করি, আপনাদের দেশে প্রতিদিন কত নারী ধর্ষণের শিকার হয়। তখন মানবাধিকার কোথায় থাকে। আমাদের দেশের পুলিশের ওপর যখন হামলা, হত্যার চেষটা করা হয় তখন তারা কি চুপ করে বসে থাকবে।’
জাতিসংঘের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা বড়বড় কথা বলে। অথচ ফিলিস্তিনে যখন সাংবাদিককে গুলি করে হত্যা করা হয়, সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়, তখন তারা কোথায় থাকে। জাতিসংঘ ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে পারে না। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আমাদের মতো গরিব দেশকে বিপদে ফেলে।’
দলের এক শ্রেণির নেতাকর্মীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যারা বসন্তের কোকিল তারা সাবধান হয়ে যান। আওয়ামী লীগের পদ নিয়ে যারা বাণিজ্য করার চেষ্টা করছেন, তারা সাবধান হয়ে যান।’
ত্রিবার্ষিক সম্মেলন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালামের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার সম্পাদক আবদুস সালাম গোলাপ, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন, সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ।
বেলা ১১টা থেকেই সম্মেলনস্থল মানিকগঞ্জ বিজয় মেলা মাঠে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। এক পর্যায়ে মাঠ ছাড়িয়ে মানুষের ঢল নেমে আসে শহীদ রফিক, বেওথা, বাসস্ট্যান্ড সড়কে। বেলা আড়াইটার দিকে সভামঞ্চে উপস্থিত হন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। বিকেল পৌনে চারটার দিকে হেলিকপ্টারে উপস্থিত হন ওবায়দুল কাদের ও তাঁর সফরসঙ্গীরা।
বক্তব্য শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। এতে গোলাম মহিউদ্দিনকে পুনরায় সভাপতি, মো. আবদুস সালামকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক এবং আব্দুল মজিদ ফটোকে সিনিয়র সভাপতি করা হয়েছে।