বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বায়ুদূষণে ৯৩টি শহরের মধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা রয়েছে ১৫তম অবস্থানে। শীর্ষে আছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। বিভিন্ন শহরের বাতাসের গুণাগুণ পরিমাপের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সূচক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের সর্বশেষ র্যাংকিং তালিকায় এ তথ্য জানা গেছে।
বাতাসের গুণাগুণ সম্পর্কে জানতে সেখানকার বাতাসে দু’ধরনের উপাদানের পরিমাণ পরিমাপ করা হয়। এগুলো হলো- পিএম ২ দশমিক ৫ এবং বিষাক্ত গ্যাসের উপস্থিতি। আমাদের চারপাশের বাতাসে বিভিন্ন গ্যাস ও ধূলিকণার পাশাপাশি ভেসে বেড়ায় অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা যা অনুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া দেখা সম্ভব নয়। পিএম ২ দশমিক ৫ নামে পরিচিত এসব বস্তুকণা নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের ভেতর ঢুকে আটকে থাকে এবং গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
ডব্লিউএইচও বায়ুর গুণাগুণ বিষয়ক নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো এলাকার বাতাসের পিএম ২ দশমিক ৫ উপাদানের পরিমাণ যদি শূন্য থেকে ৫০ থাকে, সেক্ষেত্রে সেখানকার বাতাস ‘ভালো’; সূচক যদি ৫১ থেকে ১০০’র মধ্যে থাকে, তাহলে বাতাসের মান সন্তোষজনক। একিউ সূচকে কোনো এলাকার বাতাসের পিএম ২ দশমিক ৫-এর পরিমাণ যদি ১০১ থেকে ২০০ থাকে তাহলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ এবং ২০০’র বেশি থাকলে তাকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ডব্লিউএইচওর নির্দেশনায়।
দিল্লির বায়ু গুণাগুণ ব্যবস্থাপণা কমিশনের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, একিউ সূচক অনুযায়ী রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকার বাতাসে পিএম ২ দশমিক ৫-এর পরিমাণ ৪০০’র ওপরে। ঢাকার বায়ুর গুণাগুণ পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাতাসে পিএম ২ দশমিক ৫ উপাদানের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাসের উপস্থিতির পরিমাপও করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এই গ্যাসসমূহ হলো নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড, কার্বন ডাইঅক্সাইড, সালফার ডাইঅক্সাইড ও ওজোন।
বাংলাদেশের রাজধানীর বায়ু দূষণের ব্যাপারটি দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় আছে। সাধারণত শীত ও শুষ্ক মৌসুমে অধিকমাত্রায় দূষিত থাকে ঢাকার বাতাস, বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে দূষণ কম থাকে। বিশ্বব্যাংকের পরিবেশ বিভাগ ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে ঢাকার বায়ুদূষণের ৩টি প্রধান কারণ নির্দেশ করেছিল। এগুলো হলো- ঢাকার আশপাশে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলোর ধোঁয়া, যানবাহন থেকে নিঃসৃত ধোঁয়া ও নির্মাণকাজ চলার ফলে বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তুকণার ছড়িয়ে পড়া।