বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আবারও জেলে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজা হয়।
করোনা মহামারি শুরুর পর খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে সাড়া দিয়ে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। শর্ত দেওয়া হয়, তাকে দেশেই থাকতে হবে। এরপর কয়েকবার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ফিরোজায় ওঠেন। সেখানে থাকাকালীন ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন বিএনপি প্রধান। সে সময় এবং পরবর্তীতে অন্য অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়াকে কয়েক দফায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৭৭ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে ব্লক, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
গত বছর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা। উন্নত চিকিৎসার দাবি করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করা হয় তার পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু প্রতিবারই সরকার তা নাকচ করে দেয়।
বৃহস্পতিবার জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার ১০ বছরের জেল হয়েছে। হ্যাঁ, অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ, তার বোন, ভাই, বোনের জামাই আমার কাছে এসেছে, আবেদন করেছেন, আমরা তার সাজাটা স্থগিত করে তাকে বাড়িতে থাকার সুযোগটা দিয়েছি। মানবিক কারণেই দিয়েছি। কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি করলে, যদি ওরা বেশি বাড়াবাড়ি করে, বিএনপি যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে আবার জেলে পাঠিয়ে দেব।’
আলোচনা সভায় ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকাণ্ডের পেছনে খন্দকার মোশকাত ও জিয়াউর রহমানের নির্দেশ ও পরিকল্পনা ছিল বলে জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।
অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের হাতে তৈরি দল বিএনপিকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সে কীভাবে গণতন্ত্রের প্রবর্তক হয়।