কুমিল্লার দেবিদ্বারে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই মো. মাসুদের বিরুদ্ধে অসহায় বাবা-ছেলেকে তুলে নিয়ে দিনভর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমির খারিজ সংক্রান্ত মামলার রায় একতরফা নিজেদের পক্ষে নিতেই উপজেলার মোহনপুর এলাকা থেকে শহীদুল্লাহ কাউছার ও তার বাবা সিরাজুল ইসলামকে তুলে নেয়া হয়।
এদিন রাত ১২টার দিকে নির্যাতনের শিকার যুবক শহীদুল্লাহ কাউছার নির্যাতনকারী উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই মাসুদ ও বাচনসহ অজ্ঞাত আরও ৮/১০ জনের নামে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত ওই যুবকের লোমহর্ষক বর্ণনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় তীব্র সমালোচনার সৃস্টি হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে ওই যুবক উল্লেখ করেন, দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ তার আত্মীয় মৃত সৈয়দ আহাম্মদ থেকে ৩০ শতক জমি ক্রয় করেন। ওই জমি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলামান থাকা অবস্থায় জমিটি খারিজের জন্য আবেদন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। বিষয়টি নিয়ে আমরা আপত্তি দিলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ২০ ডিসেম্বর দলিল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ তার কার্যালয়ে আমাদের উপস্থিত হয়ে শুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য নোটিশ প্রদান করেন।
যথা সময়ে শুনানিতে অংশ না নিলে খারিজ প্রত্যাশী উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষে রায় হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। নোটিশ পাওয়ার পর সোমবার আমরা শুনানিতে অংশ নিতে দেবিদ্বারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোহনপুর সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে মাসুদ, বাচনসহ আরও অজ্ঞাত ৮/১০জন আমার বাবা ও আমাকে জোরপূর্বক সিএনজি দিয়ে তুলে নিয়ে যায়। সারাদিন বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে বিকালে উপজেলার বাগুর এলাকায় মাসুদের নিজস্ব কার্যালয়ের পেছনে বালুর মাঠে নিয়ে এলোপাতারি লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আমাদের সাথে থাকা দলিল ও কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি ও ভয়ভীতি দিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে আহত অবস্থায় চিকিৎসা নিতে আমরা দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই।
এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার শহিদুল্লাহ কাউছার বলেন, আমার বৃদ্ধ বাবা ও আমাকে তুলে নিয়ে বেদম মারধর করে মাসুদসহ সঙ্গীয়রা। এসময় আমাদের জমির সকল কাগজপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আমরা যেন কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে শুনানিতে উপস্থিত হতে না পারি সে জন্য তারা আমাদের সারাদিন আটকে রেখে নির্যাতন করে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা চেয়ারম্যানের ভাই মো: মাসুদ বলেন, শহীদুল্লাহ কাউছার আমাদের বিরুদ্ধে সাজানো অভিযোগ দিয়েছে, আমরা এসব ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নই। এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান বলেন,শহীদুল্লাহ কাউছার নামে এক যুবক তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে একটি অভিযোগ দিয়েছে। শুনেছি এটা জমি সংক্রান্ত বিরোধ, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।