বাগেরহাট জেলার চারটি সংসদীয় আসনের একটি কমানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদে বাগেরহাটে হরতাল পালন করছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যরা।
রোববার (২৪ আগস্ট) সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৫টি মহাসড়ক অবরোধ করে তারা কর্মসূচির সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে করছে।
জেলায় চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে ‘সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি’ ব্যানারে অবরোধে অবস্থান করছেন বিএনপি জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
একইদিন হরতাল ও অবরোধের পাশাপাশি বাগেরহাট জেলা প্রশাসক ও ঢাকায় জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এ ছাড়া সোমবার (২৫ আগস্ট) একই সময়ে ঢাকায় নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে বিক্ষোভ মিছিলসহ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে।
এদিকে বাগেরহাট-৪ আসন বিলুপ্তি ও বাগেরহাট-৩ আসন বিভাজনের প্রতিবাদে মোংলায় শুরু হয়েছে সর্বাত্মক অবরোধ। রোববার ভোর ৫টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ কর্মসূচি চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এর ফলে সড়ক ও নৌপথে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে ইপিজেড, শিল্পকলকারখানা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, খেয়া ও ফেরি পারাপার। বন্ধ রয়েছে বন্দর জেটির কার্যক্রম ও সড়ক পথের পণ্য পরিবহনও।
আসন পুনর্বহাল দাবিতে মোংলা-খুলনা মহাসড়কের দিগরাজ ও কাটাখালীসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ব্যারিকেড দিয়ে চলছে সর্বদলীয় সর্বাত্মক অবরোধ। অবরোধ সফল করতে ভোর থেকেই রাস্তায় নেমে এসেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ। অবরোধে ফলে ভোর থেকেই দূরপাল্লার কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি। চলছে না অভ্যন্তরীণ যানও।
মোংলা পৌর বিএনপির সভাপতি মো. জুলফিকার আলী বলেন, অবরোধ সফল করতে ভোর থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মোংলা নদীর খেয়া পারাপার ও ফেরি চলাচল। এতে বন্ধ হয়ে গেছে ইপিজেড। আর সকড় পথে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সব শিল্পকলকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। শুধু জরুরি সেবা চালু রয়েছে। আসন ফিরে পাওয়ার দাবিতে বাগেরহাটের সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি সর্বাত্মক এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।
তিনি বলেন, বন্ধের আওতায় থাকছে মোংলা বন্দরও। এ অবরোধে বাগেরহাট থেকে খুলনা-মাওয়া-ঢাকা রুট অচল হয়ে পড়েছে। এতে কার্যত সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাগেরহাট।
বাগেরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, ইসির এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমরা আপত্তি দাখিল করেছি। এ ইস্যুতে সোমবার ইসি কার্যালয়ের সামনে বাগেরহাটবাসীর অবস্থান কর্মসূচি রয়েছে। আশা করছি ইসি তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আমাদের যৌক্তিক দাবি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই ইসি বাগেরহাট-০৪ আসনের বিলুপ্তি ও বাগেরহাট-০৩ আসনকে বিভাজনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেন। বাগেরহাটের একটি আসন কেটে গাজীপুরে আরেকটি আসন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। ইসির এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও আসন পুনর্বহাল দাবিতে ৩০ জুলাইয়ের পর থেকে বাগেরহাটজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি।