দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চল পুনরুদ্ধারে ইউক্রেনীয় বাহিনীর জোর তৎপরতা চলমান। এর অংশ হিসেবে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে দোনেৎস্কের বাখমুত শহরে তীব্র লড়াইয়ে জড়ায় দেশটির সেনাবাহিনী।
কিন্তু সেখানে রাশিয়ান সেনাদের তীব্র হামলায় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সেনাদল পিছু হটছে।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) লাইভ আপডেট প্রোগ্রামে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। খবরের সর্বশেষ আপডেটে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা ভারী মূল্য চোকাচ্ছে। কিন্তু তারা এখনও রণাঙ্গনে।
ইউক্রেনের দাবি, তাদের বাহিনী বাখমুত শহরের বেশিরভাগে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে, রাশিয়ার সৈন্যদের তীব্র হামলা পরাস্ত করা তদের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
দেশটির ২৮ তম ব্রিগেডের কমান্ডার কর্নেল ইউরি মাদিয়ার বলেছেন, বাখমুত তীব্র হামলা সহ্য করে যাচ্ছে। কিন্তু, হামলা প্রতিহত করা ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মধ্য পোলতাভা অঞ্চলের পাশাপাশি পূর্ব লুহানস্ক অঞ্চলের বিলোহোরিভকা ও ক্রেমিন্না এলাকায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনীয় সেনাদলের জেনারেল স্টাফ বলেছেন, খারকিভের উত্তরাঞ্চলে রাশিয়ার রকেট হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক লোক আহত হয়েছে। এ ছাড়া লুহানস্ক-খারকিভ সীমান্তে উত্তর-দক্ষিণের ফ্রন্টলাইন বরাবর ভারী গোলাবর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে।
রুশ সেনাবাহিনী গত ২৪ ঘণ্টায় বেশ কিছু অঞ্চল দখল করেছে। সেখান থেকেও পিছু হটার ইঙ্গিত দিয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
বর্তমানে দোনেৎস্কের অর্ধেক অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রুশ সেনারা। পুরো অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে নিতে তাদের বাখমুত শহর দখল ছাড়া উপায় নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাখমুত হাতে নিতে পারলে দোনেৎস্কসহ অন্যান্য শহর সহজেই দখলে নিতে পারবে রাশিয়া।
এদিকে, বাখমুতে রাশিয়া হামলার তীব্রতা এতটাই বেড়েছে, কৌশলগত কারণে সেখান থেকে পিছু হটতে পরিকল্পনা করছে ইউক্রেনের সেনারা। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা আলেক্সান্ডার রোদনেয়ানস্কি সিএনএনকে বলেছেন, প্রয়োজনে আমাদের সেনারা বাখমুত থেকে সরে যাবে। কোনো কারণ ছাড়া আমরা আমাদের সেনাদের মরতে দিতে পারি না।
ইউক্রেনীয় সেনাদের পিছু হঠার বার্তা পাওয়া গেলেও রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগিনি প্রিগোজিন জানিয়েছে, শত্রুপক্ষ শহরটিতে তাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। ইউক্রেনের কমান্ডার বাখমুতে নতুন করে আরও কয়েক হাজার সেনা পাঠিয়েছেন।
ইউক্রেনের সেনা বিশ্লেষক ওলেহ ঝানোভ জানিয়েছেন, শহরটিতে ‘সময়ক্ষেপণের জন্য’ আরও সেনা পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে রুশ বাহিনীকে আটকে রেখে বাখমুত থেকে ১৫ কিলোমিটার পশ্চিমের অঞ্চল চাসিভ ইয়ারের একটি পাহাড়ে ইউক্রেনীয় সেনাদের ফায়ারিং লাইন শক্তিশালী করা হবে। বাখমুত থেকে ইউক্রেনীয় সেনারা সরে গেলেও যুদ্ধের মোড় ঘুরে যাওয়ার মতো কিছু হবে না।
বাখমুতের রাস্তাঘাট সেনা অবস্থানসহ সব কিছু রুশ সেনাদের ফায়ারিং দূরত্বের মধ্যে রয়েছে। শহরটি প্রায় গুড়িয়ে দিয়েছে রুশ বাহিনী। তাই সেখানে থেকেও কোনো লাভ নেই।