ভারতে বাংলা ভাষায় কথা বললেই অনেককে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করে আটক কিংবা বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হচ্ছে—এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এবার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতার অভিযোগ, আসাম, ওড়িশা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লিতে বাংলা ভাষাভাষীদের পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। এসব রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বললেই অনেককে বাংলাদেশি বলে আটক করা হচ্ছে। দিল্লির বসন্তকুঞ্জ এলাকার বাঙালি পাড়ায় পানিসহ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার ঘটনাও সম্প্রতি ভারতের গণমাধ্যমে আলোচনায় এসেছে।
এদিকে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সম্প্রতি মন্তব্য করেন, জনগণনায় কেউ বাংলা ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে উল্লেখ করলে তাকে বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। তার এমন বক্তব্য নিয়েও তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেও পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় তিনি বলেন, বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি ট্যাগ দিয়ে মানুষকে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে।
ওড়িশায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। গত কয়েকদিনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে অন্তত সাড়ে ৩০০ বাংলা ভাষাভাষী ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার অভিযোগেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি উঠেছে। এই ঘটনায় বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষীদের বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে আটক বা বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে, যা মানবাধিকার ও ভাষাগত বৈচিত্র্যের দৃষ্টিকোণ থেকে গভীর উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।