কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে দিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে নারীদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সেই গুলিতে সীমান্ত নিকটবর্তী এক বাড়ির রান্নাঘরের চাল ফুটো হয়ে গেছে।
রোববার (১২ মে) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলারকুটি সীমান্তের ৯৩১ নম্বর আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের পাশে ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৬টায় ওই সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শাহাআলম ও আব্দুল কুদ্দুস বলেন, কেটে নেওয়া ধান গাছের অবশিষ্ট খড় সংগ্রহের জন্য রোববার বিকালে কয়েকজন সীমান্তের পাশে বসবাস করা নারী ভারতীয় নোম্যান্সল্যান্ডে যান। এসময় ভারতীয় নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের টহলরত এক বিএসএফ সদস্য তাদের ধাওয়া করে। খড় সংগ্রহে যাওয়া নারীরা দৌড়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করলে ওই বিএসএফ সদস্যরাও তাদের পিছু নিয়ে প্রায় ৩০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে বিএসএফ সদস্যরা রাইফেল উঁচিয়ে ওই নারীদের লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে দ্রুত ভারতের ভেতর চলে যায়।
সেই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সীমান্ত ঘেষা নুর আলম বাচ্চুর বাড়ির রান্নাঘরের চাল ফুটো হয়ে বুলেট মেঝেতে পড়ে। গুলির শব্দে সীমান্তবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। পরে নুর আলম বাচ্চুর পুত্রবধূ শাকিলা আক্তার ইতি রান্নাঘরের মেঝে থেকে এক রাউন্ড বুলেট উদ্ধার করেন।
পরে খবর পেয়ে রাত ১১টার দিকে পার্শ্ববর্তী গোরকমন্ডল ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত গুলি জব্দ করে ক্যাম্পে নিয়ে যান।
নুর আলম বাচ্চু বলেন, ওই সময় আমার পুত্রবধূ রান্না ঘরেই ছিল। ভাগ্যিস গুলিটা তার লাগেনি। মাঝে মধ্যেই ভারতীয় বিএসএফ এভাবে বাংলাদেশে ঢুকে গ্রামবাসীর ওপর অত্যাচার চালায়। আমরা সব সময় বিএসএফের আতঙ্কে থাকি। এ রকম অনাকাঙ্ক্ষিত গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ হওয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আসিফ বলেন, এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় ওই সীমান্তে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে সীমান্তে বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণের কারণ জানতে চেয়ে বিজিবি কড়া প্রতিবাদ জানালে বিএসএফ সীমান্তের সিসি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা পূর্বক মঙ্গলবার আবারও পতাকা বৈঠকের কথা জানিয়েছে।
বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন শিমুলবাড়ী কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার নরেশ চন্দ্র এবং বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৯০ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের নারায়ণগঞ্জ কোম্পানি কমান্ডার ইন্সপেক্টর রমন সিং।