বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচনের সময় সংঘটিত ‘ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতার ঘটনার’ নিন্দা জানিয়েছে ব্রিটেন। সোমবার (৮ জানুয়ারি) দেশটি বাংলাদেশে বিরোধী দলের সদস্যদের গ্রেফতার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মানদণ্ড অনুযায়ী হয়নি বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাজ্য। একই মন্তব্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল, সোমবার (৮ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে।
নির্বাচন সামনে রেখে ও নির্বাচনের প্রচার চলাকালে সহিংসতা ও ভয়ভীতি দেখানোর কর্মকাণ্ডকে বিবৃতিতে নিন্দা জানানো হয়েছে। একইসাথে রাজনীতিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো স্থান নেই বলে মন্তব্য করেছে দেশটি।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সে কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না।’
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে রোববারের সাধারণ নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হওয়ার একদিন পর ব্রিটেন এই বিবৃতি দিল।
এদিকে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে মনে করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে আমেরিকা বলছে, নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ছিল না।
ওয়াশিংটন স্থানীয় সময় সোমবার (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।
বিবৃতিতে ম্যাথিউ মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ্য করেছে যে, ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী দলের হাজার হাজার রাজনৈতিক কর্মীর গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিনের অনিয়মের প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে এই মতামত শেয়ার করে যে, এই নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু ছিল না এবং আমরা দুঃখিত যে সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের সময় এবং এর পূর্ববর্তী মাসগুলোতে সংঘটিত সহিংসতার নিন্দা করে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার প্রতিবেদন বিশ্বাসযোগ্যভাবে তদন্ত করতে এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করতে উৎসাহিত করছি। আমরা সব রাজনৈতিক দলকে সহিংসতা না করার আহ্বান জানাই।
ম্যাথিউ মিলার বলেন, সামনে তাকিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকে আমাদের ভাগ করা লক্ষ্যকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার ও সুশীল সমাজকে সমর্থন করতে, আমাদের জনগণের সঙ্গে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বে অঙ্গীকারবদ্ধ।
নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পাকিস্তানের পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে এবং ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিগমে ওয়াংচুক।