সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, আজকের পত্রিকা সম্পাদক গোলাম রহমান, ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন, সমকাল–এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, দেশ রূপান্তর–এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন ও ঢাকা ট্রিবিউন–এর সহযোগী সম্পাদক আবু সাঈদ আসিফুল ইসলাম।
বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে পিটার হাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে অধিকার লঙ্ঘনবিষয়ক স্বচ্ছতা নিয়ে অব্যাহত চাপ ও বিতর্ক রয়েছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কাজ করছে।
মতবিনিময় সভায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের বিষয়টিও উঠে আসে। এই যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকেও নানামুখী চাপ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, যুদ্ধের আগে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির যে অবস্থা ছিল, বর্তমানে কেউ সেই অবস্থানে নেই বা আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় নেই। তবে এটি সত্যি যে কিছু দেশ অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলায় বাংলাদেশের কৃষি খাতের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রেখে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা করেন পিটার হাস। এ ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ ও রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কীভাবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি করা যায়, সেই আলোচনা করা। এ জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত, সেটি নিয়েও ভাবতে হবে। বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ার পক্ষে মত দেন তিনি।
রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স করপোরেশন অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন-সংক্রান্ত কার্যক্রমে বিনিয়োগ করে থাকে। কিন্তু তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয় জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) নীতিমালার আওতায়। যেখানে বাংলাদেশ প্রবেশাধিকার হারিয়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তবে সামগ্রিক শ্রম অধিকার পরিস্থিতি ওই সব সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু হবে—এমন প্রত্যাশা করেন না মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন তিনি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রেখে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দিতে পারে না যুক্তরাষ্ট্র। যদিও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘আমাদের এটি নিশ্চিত করতে হবে যে তারা যেন প্রতিশ্রুতির অভাবে হতাশাগ্রস্ত না হয়ে পড়ে।’