লেবাননের বৈরুতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা সংগ্রাম’র ১১০ জন সদস্য শান্তিরক্ষা মেডেল পেয়েছেন।
সোমবার (২০ জুন) লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ‘বানৌজা সংগ্রাম’র ব্যানকন-১২ কন্টিনজেন্টের মেডেল প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ ইন্টারিম ফোর্স ইন লেবাননের (ইউনিফিল) মেরিটাইম টাস্কফোর্স (এমটিএফ) কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আন্দ্রেস মুগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নৌবাহিনীর ১১০ জন কর্মকর্তা ও নাবিকদের এ মেডেল পরিয়ে দেন।
এসময় নৌবাহিনী সদরদপ্তর থেকে গমনকারী প্রতিনিধিদলের প্রধান সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশন্স) রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আশরাফুল হক, লেবানন নৌবাহিনীর উপ-প্রধান ক্যাপ্টেন আসাদ আব্দুল্লাহ, লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আল মুস্তাহিদুর রহমান ও মিশন সাপোর্টের পরিচালক মেলভা ক্রসসহ ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা ও ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
মেডেল প্যারেড অনুষ্ঠানে রিয়ার অ্যাডমিরাল আন্দ্রেস মুগে শান্তিরক্ষা মিশন লেবাননে নিয়োজিত নৌবাহিনীর সব সদস্যকে সফলভাবে মিশন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সেইসঙ্গে নৌসদস্যদের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে বিশ্বশান্তি কার্যক্রমে স্বার্থক এবং নিবেদিতভাবে অবদান রাখার ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাফল্যের ধারাবাহিকতার জন্য তিনি নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে আসছে। ভূ-মধ্যসাগরে মাল্টিন্যাশনাল মেরিটাইম টাস্কফোর্সের সদস্য হিসেবে উপমহাদেশের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমানে নিয়োজিত ‘সংগ্রাম’ যুদ্ধজাহাজ লেবাননের ভূ-খণ্ডে অবৈধ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে চলেছে। পাশাপাশি ওই জাহাজ লেবানিজ জলসীমায় মেরিটাইম ইন্টারডিকশন অপারেশন পরিচালনা, সন্দেহজনক জাহাজ ও এয়ারক্রাফটের ওপর নজরদারি, দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজে উদ্ধার তৎপরতা এবং লেবানিজ নৌবাহিনী সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, লেবাননে মোতায়েনের পর থেকে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় নৌসদস্যরা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব অত্যন্ত আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে পালন করে চলেছে। নৌবাহিনীর এ গর্বিত অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও সুনাম বাড়িয়েছে।