একইসঙ্গে কানাডা বাংলাদেশের নাগরিকদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রশংসা এবং সমর্থন করে বলেও জানিয়েছে দেশটি।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে কানাডা সরকারের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা ডিপার্টমেন্ট। কানাডিয়ান সরকারের এই বিভাগটি কানাডার কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পর্ক পরিচালনা করে, কানাডিয়ান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দেখভাল ও কানাডার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা পরিচালনায় নেতৃত্ব দেয়।
মঙ্গলবারের এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কানাডা বাংলাদেশি নাগরিকদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার প্রশংসা ও সমর্থন করে এবং নির্বাচনের আগে ও নির্বাচনের সময়কালে ঘটে যাওয়া ভয়ভীতি দেখানোর মতো কাজ ও সহিংসতার নিন্দা জানাচ্ছে। যারা এসব সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সকলের প্রতি আমরা সহানুভূতি জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কানাডা হতাশা প্রকাশ করছে যে, এই নির্বাচনী প্রক্রিয়া গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মূলনীতি থেকে ছিটকে পড়েছে যার ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়া গণতন্ত্র, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান এবং মৌলিক স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সকল পক্ষের সাথে স্বচ্ছভাবে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে কানাডা, যা হবে বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। একটি কার্যকর বিরোধী দল, স্বাধীন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা শক্তিশালী এবং সুস্থ গণতন্ত্র নিশ্চিত করার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।’
গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম দেশগুলোর মধ্যে কানাডাও ছিল এবং আরও স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে তাদের আকাঙ্ক্ষার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে কানাডা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।’
এর আগে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে জানিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ ছিল না বলেও জানিয়েছে দেশটি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ্য করেছে, ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয় পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী দলের হাজার হাজার রাজনৈতিক কর্মীর গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিনের অনিয়মের প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বিগ্ন। যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য পর্যবেক্ষকদের মতো মনে করে, এই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না এবং আমরা দুঃখিত যে সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।
এছাড়া বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু মানদণ্ড মেনে নির্বাচন হয়নি বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাজ্য। নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়ায় মানুষের ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না বলেও অভিমত দেশটির।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন নির্ভর করে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মানদণ্ড যথাযথভাবে মানা হয়নি। এছাড়া নির্বাচনে সব দল অংশ নেয়নি বলে বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না।
ভোটের আগে বিরোধী দলের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করার ঘটনায় যুক্তরাজ্যের উদ্বেগের কথা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।