সৌদি আরবে বাংলাদেশি নারীরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে উল্লেখ করে তাদের নিরাপত্তা ও সহায়তার জন্য আলাদা প্রকল্প হাতে নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সেন্টার ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজ (সিডব্লিউপিএস)।
রোববার (২৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সিডব্লিউপিএস আয়োজিত অভিবাসী শ্রমিকের অধিকার বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংস্থার নির্বাহী সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফরিদা ইয়াসমিন।
তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের প্রক্রিয়া আরও সহজ করা দরকার। তাহলে সরকারি উদ্যোগগুলো চমৎকারভাবে কাজ করবে। প্রোটেকশন, প্রিভেনশন, প্রভিশন এই ‘তিন পি’ সরকার পালন করছে কি না সেটি নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে বিদেশ থেকে গর্ভবতী হয়ে আসার খবরও আমরা পাই। পরে তারা সামাজিকভাবে দুঃসহ অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যান। নারী অভিবাসীদের জন্য প্রয়োজনে আলাদা প্রজেক্ট নেওয়ার দাবি জানাই। ওয়েজ আর্নার কল্যাণ বোর্ডের ৯ ধারা অনুযায়ী নারীদের জন্য একটি প্রজেক্ট নেওয়ার নির্দেশনা আছে এবং বাচ্চার দায়িত্বও প্রয়োজনে ওই প্রকল্পের মধ্যে নেওয়া দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে নারী অভিবাসী শ্রমিকের অধিকার বিষয়ক যৌথভাবে প্রস্তুত করা নিবন্ধ তুলে ধরেন অভিবাসী কর্মী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের (ওকাফ) চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুব এলাহি। নিবন্ধনে তিনি বলেন, বিএমইটি স্ট্যাটিস্টিক ডাটা অনুযায়ী ১৯৯১ থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ১০ লাখ ৮৬ হাজার ২৫০ জন নারী অভিবাসন করেছেন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮৫ হাজার ৭৯৪ জন নারী অভিবাসন করেছেন। আমাদের নারী শ্রমিকরা যদি দক্ষ হয়ে যায়, তাহলে আরও বেশি উপার্জন করতে পারে। শুধু যাওয়া নয়, পাশাপাশি তাদের ফিরে আসার পথটাও মসৃণ হয়।
সিডব্লিউসিএসের সভাপতি প্রফেসর ইশরাত শামীম বলেন, শুধু নির্যাতনের শিকার অভিবাসী নারীদের পাশাপাশি সফল নারীদের গল্পও তুলে ধরতে হবে। এর মাধ্যমে অন্য নারীরাও বুঝতে পারবে, আসলে যাওয়ার পথটা কি হবে। যদি আপনারা দালালদের ওপর নির্ভর হয়ে যান, তাহলে বিপদ হবে। দালালরা কখনোই এই কথা বলবে না। ওরা বলে আপা, সঠিক ইনফরমেশন আমরা জানি না। কাজেই এই ব্যাপারে সঠিক ওয়েটা আপনারা তুলে ধরবেন।
বাংলাদেশ অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ রুমানা বলেন, নতুন নিয়ম হয়েছে অভিবাসীদের ট্রেনিং দুই মাস করাবে। বাচ্চা-কাচ্চা ফ্যামিলি রেখে একজন নারীর জন্য এত দীর্ঘ ট্রেনিং কষ্ট কর হয়ে যায়। এক মাসের কোয়ালিটি ট্রেনিং করালেই যথেষ্ট। এজন্য ট্রেইনারদের আরও বেশি ট্রেইনিং করাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সিডব্লিউসিএসের সুবিধাভোগীরা তাদের নিজের অবস্থান ও সংগঠনটির বিভিন্ন কার্যক্রমের গল্প তুলে ধরেন।