বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ব্যাপারে আশার বার্তা দিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলছে, পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে। সেজন্য আগেভাগেই সতর্ক করেছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) আইএমএফের ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে দিনে দিনে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় চাপে পড়েছেন মানুষ। এরমধ্যেই আইএমএফ পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পূর্বাভাস সত্য হলে আরও চাপ বাড়বে।
আইএমএফের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। আর আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২ শতাংশ, ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও ৭ দশমিক ২ শতাংশ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ১০ শতাংশ হতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ বলেন, প্রতিবেদনে বাংলাদেশ নিয়ে আলাদা কোনো বিশ্লেষণ নেই। শুধু দেশওয়ারি ছকে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি ও বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য নিয়ে প্রক্ষেপণ রয়েছে।
প্রতিবেদনে বিশ্ব অর্থনীতির সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে বলা হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে পুনরুদ্ধার হচ্ছে, তবে এর গতি দুর্বল হয়ে গেছে। এর প্রধান কারণ, চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বিভিন্ন দেশে নতুন করে করোনার ‘ডেল্টা ধরন’-এর সংক্রমণ এবং উন্নয়নশীল ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে প্রত্যাশিত টিকাদান না হওয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। ২০২২ সালে হবে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। আইএমএফ ১৮৮টি দেশের অর্থনীতি নিয়ে এই পূর্বাভাস দিয়েছে। বাংলাদেশসহ কিছু দেশের ক্ষেত্রে প্রক্ষেপণ অর্থবছরের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে। বাকি সব দেশের তথ্য ক্যালেন্ডার বছরকে ধরে দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীর ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভা চলাকালে আইএমএফ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। আইএমএফের মতে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি বাড়বে। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। এবার তা বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশ সরকার চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।