এই পরিস্থিতিতে দুই সন্তানকে নিয়ে মা সোমা দাস চরম অর্থ সংকটে দিন কাটাচ্ছিলেন। এই দুরাবস্থার খবর দুই বছর আগে পৌঁছায় বরিশাল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে। এরপর সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ সরকারি সহায়তায় ওই নারীকে কিনে দেন একটি সেলাই মেশিন। প্রশিক্ষণ শেষে টেইলার্সের দোকান দিতে ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে দেওয়া হয় নগদ টাকা। এরপর সোমাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সেলাই মেশিন চালিয়ে বর্তমানে মাসিক ২০ সহস্রাধিক টাকা আয় করছেন তিনি।
সোমা নগরীর সদর রোডের একটি ভাড়া বাসায় বাবা-মা ও নিজের দুই সন্তান নিয়ে স্বাবলম্বী জীবন কাটাচ্ছেন।
শুধু তিনিই নয়, এমনিভাবে নরসুন্দর বৃদ্ধ পরেশ চন্দ্র দাস, আবদুর রাজ্জাক, প্রতিবন্ধী ওমর ফারুকসহ বরিশাল জেলার ২০০ অসহায় নারী-পুরুষকে সরকারি-বেসরকারি সহায়তা দিয়ে উদ্যোক্তায় পরিণত করা হয়েছে। এই কাজে বিভিন্ন সময়ে সহায়তা নেয়া হয়েছে বরিশাল জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও ইভেন্ট ৮৪ ব্যাচ গ্রুপের সদস্যদের কাছ থেকে। সহায়তা শেষে এসব ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের পাশাপাশি মনিটরিং করছেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ।
সোমা দাস বলেন, মানুষ যেকোনো খারাপ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পরিশ্রম দরকার। সহায়তার পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রম করে অর্জিত টাকায় আজকে বাবা-মায়ের চিকিৎসা ও সন্তানদের পড়ালেখা খরচ বহন করছি। নিজেই নিজের কর্মসংস্থান তৈরি করে আত্মনির্ভরশীল হতে পেরে আনন্দিত বলে জানান তিনি।
বৃদ্ধ পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, নগরীর সদর রোডে একটি সেলুনে নরসুন্দরের কাজ করতাম। বয়স বেড়ে যাওয়ায় এখন বেকার। এক সন্তান আছে, সেও অর্থ সংকটে থাকায় আমার খোঁজখবর নিতে পারে না। এমন সময়ে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা পেয়ে খাবার বিক্রি করে স্ত্রীকে নিয়ে স্বচ্ছলভাবে দিন কাটাচ্ছি।
বরিশাল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, সরকারি-বেসরকারি সহায়তাসহ সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে যেকোনো ব্যক্তি নিজেকে উদ্যোক্তায় পরিণত করতে পারেন। এই কাজের পরিধি আরও বৃদ্ধির জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।