ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও সিনিয়র জেলা জজ মশিউর রহমান খান মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে সাত দিনের মধ্যে অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জোমাদ্দার (৪৫), নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু (৪১), পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার (৪৮) ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠু (৩৪)। তিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় উপজেলা ব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে প্রায় দুই বছর আগে পরিচয় হয়। পরে ওই নারীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে গোপনে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়ে স্ট্যাম্পে একটি অঙ্গীকারনামা করেন। এছাড়া বিয়ের প্রলোভনে ভুক্তভোগী নারীকে লঞ্চের কেবিন ও ঢাকার বিভিন্ন বাসায় নিয়ে স্ত্রীর পরিচয়ে বহুবার ধর্ষণ করেন এবং ভুক্তভোগীর অজান্তে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন কামরুজ্জামান বাচ্চু।
এছাড়া আরো উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চুকে ওই নারী বার বার বিয়ের কথা বললে তিনি টালবাহানা করেন। পরে পূর্বের আপত্তিকর ভিডিও ও ধর্ষণের বিষয়ে মিমাংসার কথা বলে ভুক্তভোগী নারীকে উপজেলার ছোট বগী নামক বাজারে আসতে বলেন কামরুজ্জামান বাচ্চু। সেখানে গেলে তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জোমাদ্দার ওই ভুক্তভোগী নারীকে পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের বাসায় নিয়ে যায়। এসময় ওই বাসায় অভিযুক্তরা মিলে পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ ও মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখেন। পরে এ ঘটনা কাউকে জানালে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখান তারা।
মামলার বিষয়ে অভিযুক্ত তালতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জোমাদ্দার বলেন, এ ঘটনায় আমিসহ অন্য চেয়ারম্যানদেরও কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমার প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করেছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আনিসুর রহমান মিলন বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়েছেন। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে পটুয়াখালী পিবিআইকে মামলার প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুক্তভোগী নারীর ভিডিও ভাইরাল হলে ৭-৮ জনকে অজ্ঞাতনামাসহ ওই নারীর নাম উল্লেখ করে গত ১২ এপ্রিল পর্নোগ্রাফি আইনে তালতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া এ মামলাটি করেন। ওই মামলায় ডিবি পুলিশ ভুক্তভোগী নারীকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি জেলহাজতে রয়েছেন।