মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ায় সাগরে আছড়ে পড়ছে বিশাল বিশাল ঢেউ। এ অবস্থায় উত্তাল সাগরে টিকতে না পেয়ে সুন্দরবন ও বাগেরহাটসহ উপকূলের বিভিন্ন মৎস্যবন্দরে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক হাজার ফিশিং ট্রলার।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ায় আবহাওয়া বিভাগ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা, পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার ফিশিং ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে বাগেরহাটের শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ীবাঁধের মধ্যে উপজেলা সদরসহ উত্তর কদমতলা এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পাঁচ শতাধিক পরিবার।
শরণখোলা সদরের রায়েন্দা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. জালাল আহমেদ রুমি, উত্তর কদমতলা এলাকায় পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে জানিয়ে বলেন, আগে পুরতান বেড়িবাঁধের পাশ থেকে পানি নামানোর একটি লেক ছিল। নতুন বেড়িবাঁধ করার সময় সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে পানি নামতে না পারায় উপজেলা হাসপাতালের দক্ষিণ পাশ, আরকেডিএস বালিকা বিদ্যালয়ের পেছন, পুরাতন পোস্ট অফিস এবং মাদরাসা এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার কয়েক দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলো দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে, অন্যদিকে নানা রকম পানিবাহিত রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে, বদ্ধ পানিতে মশা, সাপকোপসহ পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। বৃষ্টির পানি জমে বাড়ির উঠান আর পুকুর একাকার হয়ে গেছে। ঘরের সামনে হাঁটু পানি জমে থাকায় শিশুদের নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে পরিবারগুলো। তাছাড়া চুলায় পানি ওঠায় রান্নাবান্নাও করতে পারছে না অনেক পরিবার।
সুন্দরবন বিভাগ ও বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি ফিশারী ঘাটসহ বিভিন্ন মৎস্য বন্দরে খোঁজ নিয়ে দেখাগেছে, ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ায় সাগরে টিকতে না পারায় কয়েক হাজার ফিশিং ট্রলার উপকূরের এসব স্থানে আশ্রয় নিয়ে রয়েছে।
এদিকে, অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে মোংলা বন্দর জেটিতে সব কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলেও চ্যানেলে অবস্থানরত বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাস মাঝে মাঝে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন্দরের হারবার বিভাগ।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মোংলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬৫ মিলিমিটার। এমন বৃষ্টি আগামী আরও কয়েকদিন থাকবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।