আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের পরিচয় উদঘাটনে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই কমিশন গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের পরে এবং ৩১ ডিসেম্বরের আগে আমরা একটি কমিশন গঠন করে দেবো। সেই কমিশন বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে যারা ছিল তাদের পরিচয় উদঘাটন করে দেবে। এই কাজটি করে রিপোর্ট দেবে।
বুধবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় সংসদে ১৪৭ বিধির ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিকেলে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।
‘পঁচাত্তরের খুনি চক্রান্তকারীদের প্রেতাত্মারা এখনও ক্ষান্ত হয়নি। আজও তারা ঘৃণ্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় ফিরে এসে ইতিহাসের ঢাকাকে ঘুরিয়ে দিতে— এমন দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব চক্রান্ত ব্যর্থ করার শপথ নিয়ে জাতীয় সংসদে সাধারণ প্রস্তাব উঠানো হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এ প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।’
সংসদের ভেতরে ও বাইরে কমিশন গঠনের দাবি ওঠার কথা উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, যারা প্রত্যক্ষ হত্যা করেছে তাদের বিচার হয়েছে। এখানে কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে কমিশন করা উচিত।
তিনি বলেন, কোনো আনন্দ নয়, একটা দায়বদ্ধতা থেকে এই মহান সংসদে ঘোষণা দিতে চাচ্ছি, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের পর এবং এই বছর (২০২২ সাল) শেষ হওয়ার আগে আমরা কমিশন অব ডকুমেন্টস অ্যাক্টের আন্ডারে একটি কমিশন গঠন করবো।
তিনি বলেন, কোনো প্রতিহিংসামূলক বা প্রতিশোধের জন্য নয়, এই কমিশনের দায়িত্ব হবে নতুন প্রজন্মকে বেঈমানদের চিহ্নিত করে যাওয়া। নতুন প্রজন্ম, ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে আমরা দায়বদ্ধ থাকবো আমরা যদি এইসব বেইমান যারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল তাদের নতুন প্রজন্মের কাছে চিহ্নিত করে না দিয়ে যেতে পারি। বঙ্গবন্ধু কন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী আমাদের বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ করেছেন। সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলের মর্যাদা দিয়েছেন। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হয়েছে। ২০৪১ সালের স্বপ্ন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ। সেই উন্নত দেশ তৈরি করতে হলে, উন্নত দেশকে টিকিয়ে রাখতে হলে সেই বেঈমানদের পরিচয় উদঘাটন করতে হবে। না হলে সেই দিনের প্রজন্ম আমাদের দোষী করবেন। বলবে, আমরা তো তাদের পরিচয় দিয়ে যাইনি- তারা কীভাবে ব্যবস্থা করবে। আমরা যদি পরিচয় দেওয়া হবে তারা নষ্টও করতে পারবে না দেশের অগ্রগতি।
মন্ত্রী ঘোষণা দেন— ‘ডিসেম্বরের ১৬ তারিখের পরে ৩১ ডিসেম্বরের আগে আমরা একটি কমিশন গঠন করে দেবো। সেই কমিশন এই কাজটি করে রিপোর্ট দেবে। হত্যার নেপথ্যে যারা ছিল, তাদের পরিচয় উদঘাটন করে দেবে।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি চোখ বন্ধ করে রাজনীতি করেন, নাকি চোখ খুলে দেখেন না। এটা বুঝতে পারি না। দুই-তিন আগে উনি (খালেদা জিয়া) কারও পারমিশন না নিয়েই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আজকে (বুধবার) সন্ধ্যাবেলা কারও পারমিশন না নিয়েই আবার বাসায় ফিরে এসেছেন।’
বিএনপি হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে বলেই আজকে ১৫ আগস্ট নিয়ে সংসদে আলোচনার দিনে তারা সংসদে আসেনি বলে আইনমন্ত্রী অভিযোগ করেন।