শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করার কারণে আমার ছেলের ওপর বারবার হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন আছিয়া খাতুন নামের এক মা।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন। এসময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাজশাহীর নগর পিতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও প্রশাসনের কাছে ছেলের জীবনের নিরাপত্তা কামনা করেন এই মা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আছিয়া খাতুনের ছেলে যুবলীগ নেতা জামিল আখতার রবিন। রবিন রাজশাহী নগরীর ২৬নং ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
যুবলীগ নেতা জামিল আখতার রবিন ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে আমি কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরছিলাম। এসময় নগরীর ভদ্রা মোড়ের অতিথি হোটেলের সামনে আসলে তরিকুল ইসলাম তরিক ও সনেটসহ ৭/৮ জন অস্ত্রের মুখে আমাকে তুলে নিয়ে বালিয়াপুকুর এলাকার একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে ২০১২ সালে দায়ের করা হত্যা চেষ্টা মামলা তুলে নিতে আমাকে চাপ দেয়।
কিন্তু এ বিষয়ে প্রক্রিয়া ও সময় লাগবে বলে জানালে তারা আমাকে পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এছাড়া কিলঘুশিসহ প্রচন্ড মারধর করে। এতে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়, এক পর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে একটি ওষুধের দোকনে নিয়ে যায়। সেখান থেকে আমার পরিবারের লোকজন আমাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতলে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আমার মাথায় ছয়টি সেলাই দেয়। এই ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। তবে তারা আবারও হুমকি দিচ্ছে বলে দাবি ভুক্তোভোগীর।
তিনি আরও বলেন, মাদকাসক্ত ওই হামলাকারীদের হামলায় ২০১২ সালে আমার কিডনি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এতে ডায়ালাইসিস করা হয়। এই ঘটনায় মামলা হলে তা তুলে নিতে ইতোপূর্বেও আমার উপর বেশ কয়েকবার হামলা চালিয়েছে তারা। সর্বশেষ শনিবার আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০ এর অধিক মামলা রয়েছে।
তবে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সনেট। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা বন্ধু-বান্ধব, একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়েছে। তবে ও যেগুলো বলছে অস্ত্র-টস্ত্র, এগুলো মিথ্যা কথা। তার সাথে কথা বলতে বলতেই সবকিছু হলো, এখন সে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে।
নিজেকে যুবলীগের কর্মী দাবি করে তিনি বলেন, তার সাথে পূর্বেরও একটা ঝামেলা ছিল, ২০১২ সালে সে আমাকে মেরেছে। আমিও তাকে একবার মেরেছিলাম। একটা মামলাও চলছে, এসব নিয়ে সে বললো আর কিছুই হবে না। কিন্তু এখন এসব কেন যে করছে বুঝতে পারছি না।
গতকাল রাতের মারধরের পুরো ঘটনা মিথ্যা দাবি করেন সনেট। তিনি বলেন, তাকে নির্জন জায়গায় নিয়ে যাবো কেন? ওই ভদ্রা মোড়েই ছিল, মোড়েই কথা বলা হয়েছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।