ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ মনে করছেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার সংকট দীর্ঘস্থায়ী হবে। শনিবার ফ্রান্সের সাংবাদিকদের এই আশঙ্কার কথা জানিয়ে বিশ্বকে প্রস্তুতি নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এই দিন প্যারিসে শুরু হওয়া বার্ষিক কৃষি মেলা উদ্বোধন করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ইউরোপে যুদ্ধ ফিরে এসেছে। এই যুদ্ধ বেছে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং একটি দুঃখজনক মানবিক পরিস্থিতিতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
‘ইউক্রেনের জনগণ যুদ্ধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে এবং ইউরোপ এই প্রতিবাদে সংহতি জানিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।’
‘এখন আপনারা যদি আমার কাছে এ ব্যাপারে আমাকে প্রশ্ন করেন, সেক্ষেত্রে আমি বলব—এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে, এই সংকট দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং বিশ্বে এই যুদ্ধের পরবর্তী ফলাফলের প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। তাই আমাদের উচিত হবে, এখন থেকেই আসন্ন এই ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করা।’
দীর্ঘ দুই মাস ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় ২ লাখ সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে দেশটির পূর্বাঞ্চলে সেনা অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন ভ্লাদিমির পুতিন। তার ভাষণ সম্প্রচারের পরপরই রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায় এবং তড়িৎগতিতে ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী। ইতোমধ্যে রাজধানী কিয়েভে প্রবেশ করেছে রুশ সেনা।
সীমান্তে রুশ সেনা মোতায়েন ঘিরে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিরোধ যখন তুঙ্গে ছিল, সেসময় কূটনৈতিকভাবে এই সংকট সমাধানের পথ বের করতে গত ৭ ফেব্রয়ারি মস্কো গিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ। বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে পুতিনকে রাজি করানো।
মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেন তিনি; কিন্তু সেই বৈঠক যে তেমন সফল হয়নি, তা তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে।
মস্কোর সেই সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্রোঁ বলেছিলেন, ‘সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে এখনও কোনো স্থির সিদ্ধান্ত হয়নি; তবে আমার মনে হচ্ছে, আমাদের সমানে কঠিন দিন অপেক্ষা করছে।’