৯ দফা সময় বাড়িয়েও নির্ধারিত হজ কোটা পূরণ না হওয়ায় ৫ হাজার কোটা ফেরত যাচ্ছে। সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি সংশোধন করে ফাঁকা থাকা কোটা ফেরত দেবে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেজন্য সৌদি সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি সংশোধন করা হবে। আগামী ৯ মের মধ্যে নতুন করে চুক্তি সংশোধন করে পূরণ না হওয়া কোটা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের একটি অনুষ্ঠানে হজ কোটার ফেরত দেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর সৌদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন যাওয়ার কথা। সে লক্ষ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চূড়ান্ত নিবন্ধন শুরু হয়। এরমধ্যে কোটা পূরণ না হওয়ায় ৯ দফা সময় বাড়ানো হয় নিবন্ধনের সময়। মঙ্গলবার শেষ দিন পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত ১৫ হাজারে মধ্যে নিবন্ধন করেছেন ১০ হাজার ৩৯ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজারের মধ্যে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৪৪৭ জন। অর্থাৎ সরকারি ও বেসরকারি দুই ক্যাটাগরিতে মোট নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৮৬ জন।
এরমধ্যে হজযাত্রীদের সঙ্গে গাইড হিসেবে যাবেন ২ হাজার ৭১৫ জন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইড থাকবেন ২২৮ জন এবং বেসরকারিভাবে থাকবেন ২ হাজার ৪৮৭ জন। হজ যাত্রী ও গাইডসহ হয়েছে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ২০১ জন। সে হিসেবে এখনও কোটায় ফাঁকা আছে ৪ হাজার ৯৯৭ জন। এই ফাঁকা কোটা এখন সৌদি সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ অনুবিভাগ) মো. মতিউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যে কোটা ফাঁকা রয়েছে তা সৌদি আরবকে ফেরত দেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। যেহেতু নির্ধারিত চুক্তি অনুযায়ী কোটা পূরণ হয়নি তাই এ কোটা ফেরত দেওয়ার জন্য আগের চুক্তির সংশোধন করতে নতুন করে চুক্তি করতে হবে। সেই চুক্তি সংশোধনের কাজ শুরু করা হয়েছে।
কোটা ফেরত দেওয়ার প্রসঙ্গে আজ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ই-হজ অ্যাপ উদ্বোধনী একটি অনুষ্ঠানের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, এ বছর ৯ বার সময় বাড়ানো হয়েছে। তারপরও কিছু কোটা বাকি রয়েছে। এখন হাতে আর সময় নেই। তাই ওটা (কোটা) পূরণ না হলেও এ বছর হজ নিবন্ধনের সময় আর বাড়ছে না।
তিনি বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী মন্দা চলছে। এ অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব মুসলিম দেশগুলোর ওপর পড়েছে। ফলে পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ভারত থেকে হজে যাওয়ার সংখ্যা কমে গেছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের হজযাত্রীর সংখ্যা অন্যান্য দেশের চেয়ে ভালো। হজ শেষ হলে আপনারা দেখতে পারবেন অন্যান্য দেশ কত সংখ্যক হজ কোটা ফেরত দিয়েছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। এতে খরচ ধরা হয় ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয় ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। উভয় প্যাকেজের সঙ্গে যুক্ত হবে কুরবানির খরচ। যদিও পরে সরকারি এবং বেসরকারি দুই প্যাকেজেই ১১ হাজার টাকা করে কমানো হয়।
এদিকে আগামী ২১ মে বাংলাদেশ থেকে সৌদিগামী হজ ফ্লাইট শুরু হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ৪টায় চলতি হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হতে পারে।