ইরানে ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে চলমান বিক্ষোভের সাথে জড়িত শতাধিক বিক্ষোভকারী মৃত্যুদণ্ডের সাজার মুখোমুখি হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেককে ইতোমধ্যে সর্বোচ্চ এই সাজা দেওয়া হয়েছে এবং অনেকেই বিচারাধীন রয়েছেন। বুধবার নরওয়ে-ভিত্তিক ইরানি মানবাধিকার গ্রুপ ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এই তথ্য জানিয়েছে।
হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাহসা আমিনি নামের এক তরুণী। এর তিনদিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি জিম্মায় মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পর থেকে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। ওই তরুণীর মৃত্যু ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ইতোমধ্যে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।
এর ফলে ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর এবারই প্রথম সবচেয়ে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি নেতৃত্বাধীন দেশটির ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী। ব্যাপক দমনপীড়নের মাধ্যমে ইরানি কর্তৃপক্ষ সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ মোকাবিলার চেষ্টা করছে।
আইএইচআর বলেছে, ইরানে বিক্ষোভের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঝুঁকিতে থাকাদের মধ্যে পাঁচজন নারীও রয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হওয়া বিক্ষোভকারীদের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। বিক্ষোভকারী অনেকের পরিবার প্রশাসনিক চাপের কারণে প্রকৃত সংখ্যা জানা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে নরওয়ে-ভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা।
চলতি মাসে অন্তত দু’জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। দেশটির আন্দোলনকারীরা বলেছেন, ভুয়া বিচারের মাধ্যমে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে প্রশাসন।
ইরান হিউম্যান রাইটস বলছে, ইরানে বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৭৬ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৪ জন শিশু ও ৩৪ নারী রয়েছেন।