প্রেসিডেন্টকে আটক ও উৎখাতের দুইদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে নাইজারের ক্ষমতা দখল করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান জেনারেল আব্দুররহমান চিয়ানি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গত বুধবার প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের সদস্যরা ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে অবরুদ্ধ করেন। এরপর সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে উৎখাতের ঘোষণা দেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীও এ অভ্যুত্থানে সমর্থন জানায়।
শুক্রবার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব টেলিভিশনে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, ‘জেনারেল চিয়ানিকে ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সেফগার্ড অব দ্য হোমল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়েছে।’
৬২ বছর বয়সী জেনারেল চিয়ানিকে ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি নাইজারের পূর্বাঞ্চল ইলাবেরির বাসিন্দা। ওই অঞ্চল থেকেই সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ সদস্য নিয়োগ পেয়ে থাকেন। তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদু ইসুফুর ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন। মোহাম্মাদু ইসুফু ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০২১ সালে গণতান্ত্রিক উপায়ে সাধারণ মানুষের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মোহাম্মদ বাজোম। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান চেষ্টা চালায় সেনাবাহিনীর একটি অংশ। ওই সময় জেনারেল চিয়ানি সেই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন। কিন্তু তিনিই আবার দুই বছর পর ক্ষমতা দখল করলেন।
প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে আটকের পর পশ্চিমা দেশ ও আফ্রিকার জোটগুলো এর নিন্দা জানায়। তারা নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু সেসব আহ্বানে সাড়া না দিয়ে দুইদিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা দখল করেছে সেনাবাহিনী।
নাইজারের প্রতিবেশী দেশ মালি এবং বুরকিনা ফাসোতেও অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। মালিতে ক্ষমতা দখলের পর ফ্রান্সের সেনাবাহিনীকে বের করে দেয় সেনা কর্মকর্তারা। এরপর নাইজারে অবস্থান নেয় তারা। এখন সেখানেও সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান হওয়ায় আফ্রিকায় ফ্রান্স ও পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাব এবং ক্ষমতা প্রায় শুন্য কাছে চলে এসেছে।