২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। চলতি বছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ২ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে এই প্রস্তাব পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা চলমান কার্যক্রম বিশেষ করে অবকাঠামো উন্নয়ন, সম্প্রসারণ, মেরামত ও সংস্কার, উপবৃত্তি, পাঠ্যপুস্তকসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, ডিজিটালাইজেশন, স্কুল ফিডিং ইত্যাদি কার্যক্রম অব্যাহত রাখব। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩০ হাজার ৩৪৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক লাখ ১৭ হাজার ২৩৮টি শ্রেণিকক্ষ ও ২৯ হাজার ১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৫ হাজার ১১৮টি ওয়াশব্লক নির্মাণ এবং ৭৩ হাজার ৭৭২টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে ২৩ হাজার ৪০৮টি শ্রেণিকক্ষ ও ১৩ হাজার ৩৬৬টি ওয়াশব্লক নির্মাণ এবং ৭ হাজার ৬৫৩টি টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ চলছে।
শিক্ষার আনন্দঘন পরিবেশ নিশ্চিতের কথা জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, শিক্ষাকে কোমলমতি শিশুদের জন্য আনন্দঘন করার উদ্দেশ্যে আমরা সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষ সজ্জিতকরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছি। নির্বাচিত ১০ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ উন্নয়ন প্রকল্প (জুলাই ২০২৩ – জুন ২০২৬) গ্রহণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে মেয়েদের অবস্থান ও পড়াশোনার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য পর্যায়ক্রমে সকল বিদ্যালয়ে মেয়ে শিশু ও শিক্ষিকাদের জন্য আলাদা টয়লেট নির্মাণ করা হচ্ছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের সুবিধার্থে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে র্যাম্প নির্মাণ করছি। মাঠ পর্যায়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতিবন্ধকতা উত্তরণ সহায়ক উপকরণ ক্রয় ও বিতরণের জন্য প্রতিটি উপজেলায় চাহিদার ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আমরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী প্রদানের কাজ অব্যাহত রেখেছি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের উপযোগী করার জন্য প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাদানের ওপর অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করা হচ্ছে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের জন্য ৫০ হাজারের অধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৫৯ হাজার ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ইন্টারনেটসহ সাউন্ড-সিস্টেম সরবরাহ করা হয়েছে। আইসিটি বিষয়ে ৮০০ জন কর্মকর্তা এবং ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরির জন্য ১ লাখের অধিক শিক্ষককে হাতে-কলমে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। তাঁরা ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছেন। ফলে, পাঠদান আকর্ষণীয় হচ্ছে ও শিশুদের পাঠে মনোযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে।