চলতি মাসেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিস্কুট বিতরণ প্রকল্প শেষ হচ্ছে। এছাড়া সম্প্রতি একনেক থেকেও ফিরে এসেছে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের খাবার সংক্রান্ত একটি প্রকল্প। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের পুষ্টি ঘাটতি পূরণে কী করণীয় তা নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে। বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে শেষ পর্যন্ত মিড ডে মিল চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, চলতি মাসের শুরুতে একনেক সভায় ‘প্রাইমারি স্কুল মিল’ প্রকল্পটি তোলা হলে শিক্ষার্থীদের রান্না করা খাবারের বদলে রান্না ছাড়া খাবারের পক্ষে মত দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রকল্পটি নতুনভাবে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন। একনেক সভার তথ্য মতে, স্কুলে খাবার (খিচুড়ি) রান্না করা হলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি হতে পারে। তাই গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নতুন ফরম্যাটে খাবার দেওয়ার প্রকল্প নিতে বলা হয়েছে। সেই ফরম্যাটে দুধ, ডিম ও বিস্কুট রাখতে বলা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, বর্তমানে কোন পদ্ধতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু করা যায়, সে বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে। প্রতি স্কুলে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দিয়ে রেডিমেড খাবার দেওয়া, মায়েদের টিফিন বাটি কিনে দিয়ে তার সন্তানকে নিয়মিত স্কুলে পাঠানোর সময় খাবার দেয়া, সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, বুধবার (১৩ জুন) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে নতুনভাবে মিড ডে মিল চালু করতে সংসদীয় কমিটির সদস্যরা প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মায়েদের ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের যুক্ত করতে পরামর্শ দেন তারা। এর সঙ্গে ঢাকা মহানগরের ৩৪২টি সরকারি বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দনকরণ প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরুর করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম বলেন, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিয়ে আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। তাই খিচুড়ি কার্যক্রম বাতিল হওয়ায় নতুন পদ্ধতিতে মিড ডে মিল চালু করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে কোন পদ্ধতিতে এটি চালিয়ে নেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্টদের কাছে এ বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
স্কুলে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের পুষ্টিকর খাবার সরবরাহে ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের পুরো অর্থ যোগান দেওয়া হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। প্রকল্পের আওতায় খিচুড়ি রান্না ও পরিবেশনের প্রশিক্ষণ নিতে এক হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিদেশ সফরের একটি প্রস্তাব ছিল, যা নিয়ে সমালোচনা হয়। ফলে প্রস্তাবটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী সব শিক্ষার্থীকে পর্যায়ক্রমে স্কুল মিল কার্যক্রমের আওতায় এনে তাদের শিক্ষা, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তায় অবদান রাখতে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল।