প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বদলি ও পুনঃবদলির নির্দেশনা দিয়ে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) ‘সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা’ প্রকাশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) কর্মচারীরা চাকরি পাওয়ার দুই বছর পর বদলির আবেদন করতে পারবেন। আর একবার বদলির পর তিন বছর পার না হলে কোনো শিক্ষক আবার বদলির জন্য বিবেচিত হবেন না।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের প্রতি শিক্ষা বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে একই উপজেলা বা থানা, আন্তঃজেলা বা থানা ও আন্তঃবিভাগে বদলি করা যাবে। গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত ২৩ জন শিক্ষক অনলাইনে বদলির আবেদন করেন, তাদের ১৭ জনের বদলির কার্যক্রম ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
বদলি বিষয়ক পাঁচ পৃষ্ঠার নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বদলির সময়কাল ব্যতীত অন্য সময়ে কোনো বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে সেই পদে প্রধান শিক্ষক বদলি করা যাবে। প্রধান শিক্ষক বা সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির মেয়াদ ন্যূনতম দুই বছর পূর্ণ হলে এবং পদ শূন্য থাকলে আন্তঃজেলা বা থানা বা আন্তঃবিভাগে বদলি করা যাবে। তবে এ সময়ের মধ্যে একই উপজেলা বা থানায় পদ শূন্য হলে বদলির সুযোগ থাকবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, যেসব স্কুলে চারজন বা এর কম সংখ্যক শিক্ষক কর্মরত আছেন, শিক্ষক ছাত্র অনুপাত ১:৪০ এর বেশি রয়েছে; সেসব স্কুল থেকে সাধারণভাবে শিক্ষক বদলি করা যাবে না।
উপজেলা বা থানার মধ্যে একই পদে একাধিক আগ্রহী প্রার্থী থাকলে তাদের মধ্যে যথাক্রমে দূরত্ব, লিঙ্গ, চাকরির জ্যেষ্ঠতা, প্রতিবন্ধিতা, বিবাহ, স্বামীর মৃত্যু বা বিবাহ বিচ্ছেদ- এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে। উপজেলার মোট পদের সর্বাধিক ১০ ভাগ পদে সংশ্লিষ্ট উপজেলার বাইরে থেকে উপযুক্ত শিক্ষক পদ শূন্য সাপেক্ষে বদলি করা যাবে।
কোনো শিক্ষকের স্ত্রী বা স্বামী সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলে তাকে স্ত্রী বা স্বামীর কর্মস্থলে বদলির সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। তবে এ সুযোগ চাকরিকালে সর্বোচ্চ দুবার গ্রহণ করা যাবে। প্রশাসনিক কারণে বদলি হওয়ার তিন বছরের মধ্যে কোনো শিক্ষক পুনঃবদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের সরকারি কর্মচারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি বছর জানুয়ারি ও জুলাই মাসে বদলি করা যাবে। তবে জনস্বার্থে বা প্রশাসনিক কারণে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর যে কোনো সময় যে কোনো কর্মচারীকে বদলি করতে পারবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম চলত বছরে তিন মাস। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত চলত এ কার্যক্রম। কিন্তু ২০১৯ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তিন মাস নয়, সারা বছরই বদলি কার্যক্রম চলবে। এবার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে মন্ত্রণালয়। তিন মাসের নিয়মেই হতে যাচ্ছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম।
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এই বদলি কার্যক্রমের অনলাইন আবেদন শুরু হতে যাচ্ছে। অনলাইনে এ প্রক্রিয়া শুরুর আগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে যারা অন্য কর্মস্থলে যেতে চান তাদের আবেদন নেওয়া হয় গত ২৯ জুন থেকে।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ কবির উদ্দীন স্বাক্ষরিত আরেকটি নির্দেশনায় বিষয়টি জানানো হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, নির্ধারিত সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন দাখিল ও প্রক্রিয়াকরণসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ এবং অনুমোদিত নির্দেশিকার আলোকে ৩ বছর বা তদূর্ধ্ব মেয়াদে ও নিজ জেলায় কর্মরত কর্মচারীদের বদলির কার্যক্রম যথাসময়ে শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।