উচ্চমাধ্যমিকের (এইচএসসি) বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক’ প্রশ্ন রাখার ঘটনায় জড়িত পাঁচ শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করেছে যশোর শিক্ষা বোর্ডের গঠিত তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে এ শিক্ষকদের অপরাধের ধরন অনুযায়ী শাস্তির সুপারিশও করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক’ প্রশ্ন রাখার ঘটনায় জড়িত পাঁচ শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করেছে তদন্ত কমিটি। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশও করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো আহসান হাবীব বলেন, আজ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।
দোষী শিক্ষকদের কী ধরনের শাস্তি হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে নাম গোপন রাখার শর্তে যশোর শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এমপিও বাতিলসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের লঘু ও গুরু যেকোনো শাস্তি হতে পারে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
গত ৮ নভেম্বর প্রশ্নপত্রে ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক’ প্রশ্ন রাখার ঘটনায় জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক এ কে এম রব্বানী। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. সিরাজুল ইসলাম ও উপ-কলেজ পরিদর্শক মদন মোহন দাশ।
উল্লেখ্য, ৬ নভেম্বর সারা দেশে এইচএসসির বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বোর্ডের ‘কাসালাং’ সেটের নাটক সিরাজউদ্দৌলা অংশের ১১ নং প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের বিষয়টি উঠে আসে। ৮ নভেম্বর এ ঘটনায় জড়িত থাকায় পাঁচ শিক্ষককে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
ওই প্রশ্নপত্র প্রণয়নে যশোর শিক্ষা বোর্ডের একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা জড়িত ছিলেন বলে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার জানিয়েছিলেন।
ওই দিনই ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের প্যাডে চিহ্নিত শিক্ষকদের নাম ও পরিচয় সংবলিত একটি অস্বাক্ষরিত নথি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের গণমাধ্যমে সরবরাহ করেন।
এতে বলা হয়, বাংলা প্রথম পত্রের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক প্রশ্নপত্রটি যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক প্রণীত। বাংলা প্রথম পত্রের বিতর্কিত প্রশ্নটি করেছেন ঝিনাইদহের মহেশপুরের ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল। আর প্রশ্নপত্রটি পরিশোধনের (মডারেশন) দায়িত্বে ছিলেন নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দীন শাওন, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুর রহমান, মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।