খেলাপিসহ ঋণমান অনুযায়ী নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে ৮ ব্যাংক। সদ্য বিদায়ী বছরের শেষ প্রান্তিক শেষে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) এসব ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর শেষে প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে সরকারি চার ব্যাংক, বেসরকারি তিন এবং বিশেষায়িত এক ব্যাংক। এই আট ব্যাংকের সামষ্টিক প্রভিশন ঘাটতি ১৯ হাজার ৪৬ কোটি ছাড়িয়েছে। যা তার আগের প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেষে ছিল ১৯ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা। তবে কিছু ব্যাংক প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করায় পুরো ব্যাংক খাতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৯ কোটি টাকা।
রাষ্ট্র মালিকানার চার ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি রয়েছে বেসিক ব্যাংকের। নাজুক অবস্থায় থাকা ব্যাংকটিতে জুন-ডিসেম্বরে প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর পরেই রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক। এ ব্যাংকটির প্রভিশন ঘাটতি ৪ হাজার ৪২২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া রূপালী ব্যাংকের ২ হাজার ৮১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ৩৪৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা প্রভিশন ঘাটতিতে পড়েছে।
বেসরকারি ৩টি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি ৬ হাজার ৬১৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ১৭১ কোটি ১৬ লাখ টাকা আর স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১৩৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। তাছাড়া বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ ৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
সদ্য বিদায়ী বছরের শেষ প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর) শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা। বিতরণ করা এসব ঋণের মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা, মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৭ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা।