আটকে গেছে প্রবাসী ভোটার কার্যক্রম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করা প্রবাসী বাঙালিদের সেদেশে ভোটার করার উদ্যোগটি অর্থসংকটের কারণে থমকে গেছে। এ খাতের জন্য সরকার বাড়তি অর্থ বরাদ্দ দেয়নি। তাই প্রবাসে প্রবাসীদের ভোটার করা চলতি বছরে সম্ভব হচ্ছে না।
তবে অর্থ বরাদ্দ না থাকলেও প্রাথমিক কার্যক্রম গুছিয়ে রাখতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু প্রাণসংহারী করোনার প্রাদুর্ভাবে সেই উদ্যোগেও ভাটা পড়েছে। ইসির পরিকল্পনা ছিল, প্রাথমিক অবস্থায় ৪০টি দেশকে বেছে নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে বাঙালি অধ্যুষিত জনবহুল দেশগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অর্থ বরাদ্দ পেলে আগামী বছর থেকে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে টেকনিক্যাল টিম পাঠিয়ে তাদের ভোটার করা ও স্মার্ট কার্ড দেওয়া শুরু করবে। এর আগে মালয়েশিয়া, লন্ডন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে সীমিত পরিসরে ভোটার করেছিল কমিশন। করোনা ভাইরাসের কারণে এ উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়।
প্রবাসীদের মধ্যে ৬৭ শতাংশই বাস করে মাত্র ২০টি দেশে। এর মধ্যে রয়েছে :যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, জার্মানি, রাশিয়ান ফেডারেশন, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফ্রান্স কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, ইতালি, ভারত, ইউক্রেন, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, কাজাখস্তান, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, জর্ডান ও কুয়েত। প্রায় ১ কোটি বাঙালি বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। ইসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, দেশের পাশাপাশি চলতি বছর বিদেশে থাকা প্রবাসী বাঙালিদের সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে স্থাপিত দূতাবাসে ডেস্ক খুলে ভোটার করার কথা ছিল। কিন্তু সরকার থেকে পাওয়া বরাদ্দ দিয়ে প্রবাসীদের এখনই ভোটার করা ও স্মার্ট কার্ড প্রদান সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য আগামী বছর বরাদ্দ সাপেক্ষে প্রবাসীদের ভোটার করা হবে।
এদিকে, স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ, স্মার্ট কার্ড পারসোনালাইজেশন, স্মার্ট কার্ড উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো এবং এটি নাগরিকদের কাছে পৌঁছানো বাবদ সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ৮৮ কোটি টাকা, যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
জানতে চাইলে আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবুল কাশেম মো. ফজলুল কাদের বলেন, দেশেই স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ, মুদ্রণ থেকে বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সরকার ৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ভবিষ্যতে ১৮ বছরের কম বয়সিদের এখন থেকে স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে। আর সদ্যভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুরাও ইউনিক-সংবলিত কার্ড পাবে।
স্মার্ট কার্ড প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯ কোটি ভোটারকে স্মাট কার্ড দিতে আইডিয়া প্রকল্প হাতে নেয় ইসি। স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ, পারসোনালাইজেশন ও বিতরণের জন্য ফ্রান্সের ওবারথুর সঙ্গে চুক্তি ছিল। ওবারথু শর্ত ভঙ্গ করায় চুক্তি বাতিল করা হয়। সংস্থাটির কাছ থেকে ৭৭ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ব্ল্যাংক কার্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির (বিএমটিএফ) তত্ত্বাবধানে এই কার্ডগুলোর মুদ্রণ হচ্ছে।