প্রথমে প্রবাসীদের নম্বর সংগ্রহ করে মোবাইলে প্রেমের অভিনয়। পরে অপহরণের করে ধারণ করা হতো অশ্লীল ভিডিও। সেই ভিডিও ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করে আসছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি চক্র। সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের গৌতম পাড়া থেকে ওই চক্রের নারী-পুরুষসহ ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অর্থ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন।
আটক ব্যক্তিরা হলেন ঘাটুরা এলাকার রেনু মুন্সির ছেলে আব্দুল আহাদ (৩৪), তার স্ত্রী ববিতা বেগম (৩০), মধ্যপাড়ার রবি বাবুর্চির ছেলে সাজন (৩১), সদর উপজেলার মজলিশপুরের কবির মিয়ার মেয়ে লিপি আক্তার (১৮), ভাদুঘর এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে কথিত সাংবাদিক মশিউর রহমান (৪৩) ও শেরপুর এলাকার খায়রুল ইসলামের স্ত্রী মক্ষিরানী জুহুরা বেগম (২২)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোমবার (১৫ আগস্ট) সরাইল উপজেলার অরুয়াইলের প্রবাসী শাকিল মিয়াকে অপহরণ করে একটি চক্র। পরে মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। তার পরিবারের সদস্যরা বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠান। পরে তারা আরও টাকা পাঠানোর জন্য বলেন। টাকা না দেওয়ায় মারধর করা হয় শাকিলকে। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ পুলিশকে জানান পরিবারের সদস্যরা।
পরের দিন একই এলাকার আরেক প্রবাসী সোবহান মিয়াকে অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপণ দাবি করে দুটি নম্বরে কয়েকটি ধাপে ৬০ হাজার টাকা আদায় করেন অপহরণকারীরা। মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে ওই দুই প্রবাসীকে ছেড়ে দেন তারা। দুজন ফিরে এসে ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলেন।
ওই দুই প্রবাসী জানান, মেয়েদের মাধ্যমে মোবাইলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে চক্রটি। পরে দেখা করার কথা বলে তাদের অপহরণ করে আটকে রাখা হয়। পরে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেল করা হয়।
অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার দিনগত মধ্যরাতে ভুক্তভোগীদের নিয়ে অভিযান শুরু করে সরাইল থানা পুলিশ। অভিযানে সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গৌতম পাড়া থেকে চক্রের ছয়জনকে আটক করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, চক্রটির উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রবাসীদের ফাঁসিয়ে মুক্তিপণ আদায় করা। এই চক্রের সাংবাদিক পরিচয়ধারী মশিউর রহমানের মোবাইলের অনেকগুলো অশ্লীল ভিডিও পাওয়া গেছে। অপর অপরাধী সাজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে সাতটি মামলা রয়েছে। এসব ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।