বয়স ও স্বাস্থ্য বিবেচনায় খালেদা জিয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবাধিকারের সর্বোচ্চ নজির দেখিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বিএনপি নেতাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, জিয়াউর রহমান ও বেগম জিয়ার শাসনামলে কোনো দণ্ডিত, সাজাপ্রাপ্ত আসামি এ ধরনের সুযোগ (অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি ও বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া) পেয়েছেন কি? অথবা তাদের শাসনামলে বিরোধী দলের কেউ এমন সুযোগ পেয়েছেন, এমন কোনো নজির তারা দেখাতে পারবেন কি?
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা এখন বেগম জিয়ার জন্য মায়াকান্না করছেন। অথচ তার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য চোখে পড়ার মতো একটি মিছিলও তারা করতে পারেনি। খালেদা জিয়ার চিকিৎসাকে ইস্যু বানিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করাই বিএনপির উদ্দেশ্য বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাসভবনে ব্রিফিংকালে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে কে মানবিকতার নজির স্থাপন করেছেন, আর কারা শিষ্টাচারহীনতা, অশালীনতার চর্চা করছেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে এমন প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২১ আগস্ট রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো বিএনপি। অথচ তখন সংসদে দাঁড়িয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া বলেছিলেন, গ্রেনেড নাকি শেখ হাসিনা ভ্যানিটি ব্যাগে করে নিয়ে গিয়েছিলেন। ‘এ বক্তব্য কোন সভ্য দেশের নেতার বক্তব্য ছিল’- বিএনপি মহাসচিবের কাছে তা জানতে চান ওবায়দুল কাদের।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেছিলেন- কোনো সভ্য দেশের নেতার কাছে এমন বক্তব্য না কি আশা করা যায় না। ফখরুল ইসলামকে এ সমালোচনা করার আগে আয়নায় নিজের চেহারা দেখার অনুরোধ জানান ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের আরও প্রশ্ন রেখে বলেন, সন্তানের মৃত্যুর পর বেগম জিয়াকে সান্ত্বনা দিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যখন গিয়েছিলেন, তখন তারা দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেই অমানবিক ও অসভ্য আচরণ কোন সভ্য দেশের একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান করতে পারেন- এর জবাব কি দেবেন বিএনপি মহাসচিব? গণভবনে চায়ের আমন্ত্রণের বিপরীতে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ কোন সভ্য দেশের একজন দলপ্রধান করতে পারেন- তার জবাবও কি বিএনপি মহাসচিব দেবেন?
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিএনপি মহাসচিবকে সম্মানের সঙ্গে নিজের দিকে তাকানোর অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জনগণের ভোটের সঙ্গে প্রতারণা করে যিনি সংসদে যান না, অথচ তার দল সংসদে – এমন দ্বিচারিতার রাজনীতি কে করেছে? কোন সভ্য দেশের রাজনৈতিক দল করতে পারে? আশা করি জবাব দেবেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মূল কারিগর এবং বেনিফিশিয়ারি যারা, যারা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করলো, গ্রেনেড হামলা চালালো, ১৫ আগস্ট জন্মদিন না হওয়া সত্ত্বেও যিনি ভুয়া জন্মদিন পালন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অনুভূতিতে আঘাত করলেন, সেই দল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম জিয়ার জন্য মানবাধিকারের সর্বোচ্চ নজির দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ফখরুলের উদ্দেশ্যে কাদের বলেন, তাহলে বলুন- এদেশের রাজনীতিতে কে মানবিকতা স্থাপন করেছেন, আর কারা রাজনীতিতে শিষ্টাচারহীনতা, অশালীনতার চর্চা করে যাচ্ছে।