নারী পুলিশ কনস্টেবল পদে মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছেন মীম আক্তার। কিন্তু স্থায়ী ঠিকানা ও মেডিকেল সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তিনি বাদ পড়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে ভূমিহীন হওয়ার কারণে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি থেকে বাদ পড়েছেন বলে দাবি করেছেন মীম আক্তার ও তার পরিবার। এ বিষয়ে মীম আক্তার বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করে বিভিন্ন পরীক্ষায় পাশ করেছি। মেধাক্রমে প্রথম হয়েছি। ৯ ডিসেম্বর পাশ করা অন্যদের ফোন করা হলেও আমাকে ফোন করা হয়নি। বিষয়টি জানার জন্য আমি খুলনা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ সুপার স্যার না থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলেছি। সেখান থেকে আমার পুলিশ ফেরিফিকেশনে সমস্যা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আমার স্থায়ী ঠিকানা নেই।
মীম আক্তারের পিতা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, শিরোমনিতে ডাকা হয় মীম আক্তারকে। সেখানে তিন দিনের শারীরিক পরীক্ষা, লিখিত পরীক্ষা, ভাইভা ও খুলনায় মেডিকেল পরীক্ষা দেয়। এরপর চূড়ান্ত ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের মেডিকেল করা হয়। ১২০০ মেয়ের (পরীক্ষার্থী) মধ্যে মীম প্রথম স্থান অধিকার করেছে। চলতি মাসের ৭ তারিখ ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে যায়। এ সময় ৫ জন ছেলে ও চারজন মেয়েকে রেখে দিয়েছিল মেডিকেল সমস্যা রয়েছে বলে। ৯ জনের মধ্যে ২টা ছেলে ও মীম সিলেক্ট হয়। আর বাকিগুলোর চশমা সংক্রান্ত সমস্যা লেখা হয়। মীমের কোনো চশমা বা মেডিকেলে সমস্যা বলেনি। এরপর ৮ তারিখ আবার মেডিকেল করা হলে সেখানে ফিট ছিল বলে তিনি দাবি করেন। কিন্তু ৯ ডিসেম্বর ওখান থেকে ফোন করে অনেককে জানিয়েছে, কিন্তু মীমকে কোনো ফোন দেয়নি ও রেজাল্ট জানায়নি।
তিনি বলেন, মীম শুক্রবার জেলা পুলিশ লাইনে গিয়েছিল। শুক্রবার বন্ধ থাকায় সেখান থেকে কেউ কিছু বলতে পারেননি। আজ আবার এসপি সাহেবের সাথে মীম দেখা করতে যায়। তবে এসপি সাহেবকে না পেয়ে অ্যাডিশনাল এসপি তানভীর আহম্মেদের সাথে কথা বলে। সেখান থেকে জানানো হয় আমাদের কোনো স্থায়ী বাড়ি নেই। অন্যকোথাও বাড়ি রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কোথাও বাড়ি নেই। বাগেরহাটে বাড়ি থাকলে তো স্থায়ী ঠিকানা সেখানের দিতাম। আর এখন যেখানে থাকি সেখানে অস্থায়ী ঠিকানা দিতাম। আমার কোনো ভূমি নেই বলে আমি ভূমিহীন সার্টিফিকেট দিয়েছি। মীমের জন্ম, স্কুল, কলেজ আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র সবই খুলনার। মূলত ভূমি নেই বিধায় মীমের চাকরি হচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
বর্তমানে তারা খুলনার সোনাডাঙ্গা আবাসিকে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। এ বিষয়ে খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, আমরা তো ভালো প্রার্থীকে চাই। চান্স পাওয়ার ৭/৮টি ধাপ রয়েছে। এসব ধাপে যে কোনো মুহূর্তে যে কেউ ডিসচার্জ হয়ে যায়। ট্রেনিংয়ে যাওয়া পর্যন্ত যে কোনো মুহূর্তে যে কেউ বাদ পড়তে পারে। এখন চান্স পাওয়াটা আপেক্ষিক বিষয়। প্রার্থী স্থায়ী ঠিকানা দিয়েছে খুলনার। কিন্তু আমরা দেখলাম সেখানে তার কোনো ঠিকানা নেই। সে সেক্ষেত্রে তথ্য গোপন করেছে।