স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোতে ফের করোনা সংক্রমণ বাড়ছে আমাদেরও সংক্রমণ বাড়তে পারে। এজন্য সচেতন থাকতে হবে। রবিবার (২৪ এপ্রিল) মহাখালী জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান (নিপসম) অডিটোরিয়ামে জাতীয় পুষ্টি দিবস ২০২২ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশে এখন খুব একটা লোক করোনার টিকা নেওয়ার বাকি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা টিকা পায়নি তারা টিকা দিতে চায় না। অনেকে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে মিলায়, কিন্তু তাদের জনসংখ্যা অনেক কম। আমরা দিনে এক কোটি টিকাও দিয়েছি। আমরা ১৩ কোটি মানুষকে টিকা দিয়েছি।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, মানুষের গড় আয়ু এখন ৭৩ বছর। ভালো খাবার খেলে শরীর সুস্থ থাকে। ভালো খাওয়া বলতে পুষ্টিকর খাবার। আমাদের দেশে পুষ্টি সেবার অনেক উন্নতি হয়েছে। উন্নয়ন হয়েছে প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে। মানুষকে এর মাধ্যমে সেবার পাশাপাশি কী খেতে হবে কী খাওয়া উচিৎ নয় তাও শিক্ষা দেওয়া হয়। আমরা লবণ পরিহার করতে বলি। অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার বর্জন করতে বলা হয়।
তিনি বলেন, সংক্রামক ব্যাধি টিবি, পোলিও, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ আমরা কন্ট্রোলে রাখতে পেরেছি। এজন্য মৃত্যু হার কমেছে। কিন্তু আমাদের অসংক্রামক রোগ অনেক বাড়ছে। ক্যানসারের মতো রোগ বাড়ছে। এসবের জন্য খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণের দিকে নজর দিতে হবে। এমন খাবার খেতে হবে যেটা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। এখন মানুষ গড়ে ১২০টা ডিম খায় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে মানুষের ক্যালোরিও আশপাশের দেশ থেকে বেশি। এখনো দরিদ্রসীমার নিচে ১০-১৫ শতাংশ মানুষ আছে তা জানি। কিন্তু আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আছে।
তিনি বলেন, এখন ফলের সিজন। বেশি করে ফল খেলে শরীর সুস্থ থাকবে। এর সঙ্গে ডিম-দুধ খাওয়াতে হবে। দেশের মানুষ আগে খর্বাকৃতির ছিল। যেটা আগে ৫০ শতাংশ ছিল তা এখন ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, আধুনিকতায় আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেলেও কিছু জায়গায় পিছিয়ে গেছে। সন্তানের জন্য মায়ের থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাচ্চার শাল দুধ। কিন্তু সেটা ঠিকমতো বাচ্চারা পায় না। অধিকহারে সিজার হওয়ায় প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু নরমাল ডেলিভারি হওয়া ভালো।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার খুরশিদ আলম বলেন, স্বাধীনতার শুরু থেকে আমাদের নানা পুষ্টি সমস্যা ছিল। মানুষের ওজন কম ছিল, স্বাস্থ্য কম ছিল। এখন তা কমে এসেছে। জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রমের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সারাদিন রোজা রেখে না খেয়ে সন্ধ্যায় আমরা খাচ্ছি, কিন্তু কী খাচ্ছি সেটা আপনারাই জানেন। প্রতি তিনজনে একজন এনসিডিতে মারা যাচ্ছে। এজন্য আমাদের পুষ্টি নিয়ে সচেতন হতে হবে। আমাদের সুস্থ থাকতে হলে নতুন যে ফাস্টফুডের বিপদ এসেছে সেটাকে বাসা থেকে বিদায় জানাতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) চেয়ারম্যান এম ইকবাল আর্সলান, স্বাচিপের মহাসচিব এম এ আজিজ, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের অধিনায়ক (বিএমএ) এহতেশামুল হক চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ডা. জোবায়দা নাসরিন, জাতীয় পুষ্টি কার্যক্রমের পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।