কিংবদন্তি ফুটবলারের প্রয়ানে শোকে স্তব্ধ গোটা ফুটবল দুনিয়া। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনকে কাঁদিয়ে অমর হয়ে ওঠা ‘পেলে’ ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন। পেলে আর নেই, তবে রয়ে গেছে তার সুদীর্ঘ সাফল্যের তালিকা। যে সাফল্যগাথা আজীবন লেখা থাকবে বিশ্ব ফুটবলের সোনালী ডায়েরিতে। এই ব্রাজিলিয়ান মহাতারকার জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে এখন চলছে বিস্তর আলোচনা। দীর্ঘ ৫৩ বছর আগে বিশ্বকাপের মঞ্চে অনবদ্য এক কীর্তি গড়ে কোটি টাকার উপর আয় করেছিলেন তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার।
১৯৭০ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পেরুর বিপক্ষে ম্যাচের আগে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্যরকম এক চুক্তি করে বসেন পেলে। সেই চুক্তির ফলে ১ লাখ ২০ হাজার ডলার পেয়ে যায় এই ব্রাজিলিয়ান।
মূলত ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান পুমা পেলেকে ম্যাচ শুরুর আগে মাঠের মাঝখানে গিয়ে জুতোর ফিতা বাঁধতে বলে, তাতেই বাংলাদেশি মুদ্রায় অঙ্কটা ১ কোটি ২৩ লাখ ৪৯ হাজার ৮০ টাকা পেয়ে যান ফুটবলের এই কিংবদন্তি। পেলের সেই জুতোর ফিতা বাঁধার ছবি তোলা এবং ভিডিও করার জন্য ক্যামেরাম্যানকেও টাকা দেওয়া হয়েছিল।
সেই ১৯৭০ সালের ঘটনা এতো পরিমাণ টাকা আজকের বাজারে একবার কল্পনা করতেই চোখ উপরে উঠে যাওয়ার উপক্রম হবে।
ফুটবলের রাজা পেলের বিশাল অঙ্কের টাকা পাওয়ার পেছনের কারণ ছিল দুই ব্যবসায়ী ভাইয়ের দ্বন্দ্ব। অ্যাডলফ ড্যাসলার ও রুডলফ ড্যাসলার নামের দুই ভাই ১৯৪০ সালে তাদের ব্যবসা আলাদা করে ফেলেন।
তাদের বিরোধিতা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, শেষ পর্যন্ত দুই ভাই-ই পেলের সঙ্গে চুক্তি করা থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। তাদের মধ্যে সমঝোতা হয় তারা কেউই ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির সঙ্গে চুক্তি করবেন না। কিন্তু ১৯৭০ সালে সেই চুক্তি ভঙ্গ করে রুডলফ ড্যাসলার গোপনে পেলের সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেন। তবে দুই ভাইয়ের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের মাঝে কোটিপতি বনে যান ফুটবল কিংবদন্তি। সেবার বিশ্বকাপ শিরোপাও নিজেদের করে নেই সেলেসাওরা।