২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বর ঘেরাওয়ের দীর্ঘদিন পর আবারো বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচনায় এসেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গত মাসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন উপলক্ষে দেশব্যাপি জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন শুরু করে হেফাজত।
হেফাজতে ইসলামের আলোচিত যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে রবিবার গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার (১৯ এপ্রিল) তাকে আদালতে তোলা হলে মোহাম্মদপুরে ভাঙচুরের মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
পরে গত ২৬ মার্চ রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা হিসেবে আরও ২ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে গত ৫ এপ্রিল পল্টন থানায় মামলা করা হয়। এরপর থেকেই সহিংসতাকারী হেফাজতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত এক সপ্তাহে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ হেফাজতের ১০ কেন্দ্রীয় নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলামাবাদী, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত হোসাইন রাজি, যুগ্ম মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবীব ও সহকারী মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহাম্মদ অন্যতম।
তবে, হেফাজতের মধ্যে এখনো সক্রিয় রয়েছেন- এমন প্রায় ৩০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যারা সবাই এখন গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি ২৫ জন নজরদারিতে আছেন। এসব নেতার প্রায় সবাই ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনার কোনো না কোনো মামলার আসামি। পর্যায়ক্রমে তাদের গ্রেফতার হবে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার কথায় এ গ্রেফতার অভিযান অব্যহত থাকার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেছেন, হেফাজতের আরও অনেক নেতা টার্গেটে আছেন। পর্যায়ক্রমে তাদের গ্রেফতার করা হবে। এছাড়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সহিংসতার ঘটনায় ৭৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায়ও নজরদারির মধ্যে থাকা অনেককে আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীবকে রোববার আদালতে হাজির করে পল্টন থানায় ২০১৩ সালের একটি মামলায় রিমান্ড আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এদিকে রোববারই সাত দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীর। তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।