বাংলাদেশ পুলিশের আধুনিকায়নে সরকার ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সরকার পুলিশের আধুনিকায়নের পাশাপাশি পুলিশের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনের পর বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ বাহিনীটির ১১৭ সদস্যকে বিপিএম ও পিপিএম পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করে বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের আস্থা অর্জন করেছে।
সরকারপ্রধান বলেন, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে দেশে বিএনপি-জামায়াত আগুন সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। জামায়াত-শিবির-বিএনপির লোকেরা প্রকাশ্যে পুলিশকে হত্যা করেছে। সে সময় ২৯ জন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তারপরও পুলিশ সদস্যরা জীবন বাজি রেখে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। অতীতের মতো আর কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ বাহিনীকে সবসময় সজাগ থাকতে হবে।
সরকারের দায়িত্ব পালনে তিন মেয়াদে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পুলিশের আধুনিকায়নেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশকে আরও গতিশীল করতে একে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে রূপ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক চক্রান্ত হয়েছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ কখনও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে না। কোনো প্রতিবন্ধকতা যেন অগ্রযাত্রায় বাধা না হয়ে দাঁড়ায়, মন্দার ধাক্কা যেন না আসে, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ ও তার প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট পরিস্থিতি তৈরি না হলে আমরা আরও এগিয়ে যেতে পারতাম। ১৯৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। এ সময় পুলিশকেও আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্মত স্মার্ট পুলিশ গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।
এর আগে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ এর উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। পরে বার্ষিক পুলিশ প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন।
এবারের বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন খুলনা রেঞ্জের পুলিশ সুপার কাজী মইন উদ্দিন। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন কন্টিনজেন্টের পুলিশ সদস্যরা প্যারেডে অংশ নেন।
২০২২ সালে বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ১৫ জন পুলিশ ও ২ র্যাব সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ২৫ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ দেওয়া হয়।
গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ৫০ জনের হাতে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী পুলিশের ১১৭ সদস্যের এই পদক পরিয়ে দেন।