শাস্তি ছাড়াই করোনার ভুয়া টেস্ট রিপোর্ট দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষমা করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। শুধু তাই নয় তালিকার প্রথমে রেখেই তাদেরকে আবার দেয়া হয়েছে এয়ারপোর্টে পিসিআর মেশিন বসানোর দায়িত্ব। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার ও স্টিমজ হেলথ কেয়ার। স্বাস্থ্য অধিদফতরের দাবি অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো শুধরে নিয়েছে নিজেদের।
রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজির পুকুরচুরির খবর অজানা নয় কারোই। অনিয়মের আভিযোগে প্রতিষ্ঠান বন্ধের পাশাপাশি আটক হয়েছেন দায়িত্বশীলরা। পজিটিভ রোগীকে নেগেটিভ সনদ, নমুনা না নিয়ে নেগেটিভ ঘোষণাসহ ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ আসে আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রাথমিক তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে গেলো ৯ জুন বন্ধ করা হয় চারটি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে- সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার, স্টিমজ হেলথ কেয়ার, আল জামি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসেস।
অজানা কারণে দুই মাসের মধ্যেই আবারো সচল প্রতিষ্ঠানগুলো। চলছে নমুনা সংগ্রহসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম। উল্টো আভিযুক্ত দুই প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এয়ারপোর্টে পিসিআর মেশিন বসানোর। সর্বোচ্চ ৫ দিনের মধ্যে কার্যক্রম শুরুর তাগিদ দেয়া হয় তাদের। ভয়াবহ অভিযোগ প্রমাণের পরও স্পর্শকাতর কাজের তালিকার শুরুতেই কিভাবে এই দুই প্রতিষ্ঠানের ঠাই হয় সেটি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
এয়ারপোর্টে পিসিআর বসানোর আবেদন করেছিলেন এভারকেয়ার, আইদেশী, প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট, বারডেম ও প্রাভাসহ অনেকেই। তবে অধিদফতরের সুপারিশ মেলেনি। কারণ হিসেবে বলা হয় আবেদনে যথেষ্ট তথ্য নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া বলেন, তারা পেছনে যে ভুলভ্রান্তি করেছে সেজন্য তারা অনুতপ্ত । তাদের মুচলেকা নিয়ে কাজ দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমন ভূমিকার সমালোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিযোগ, অনিয়মের শাস্তি দুরে থাক আপোস করেছে প্রতিষ্ঠানটি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, এই সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহের দানা বেঁধেছে। এর পিছনে কোনো কালো-কারসাজি থাকতে পারে। বিদেশী চাহিদার প্রেক্ষিতে দ্রুত রিপোর্ট পেতে এয়াপোর্টে পিসিআর ল্যাব বসানোর দাবি ওঠে। আন্দোলন করেন প্রবাসীরাও। অবশেষে সাত প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় দায়িত্ব।