ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আবারও সতর্কতা দিয়েছেন, ইউরোপের সর্ববৃহৎ জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। তিনি দাবি করেছেন, রুশ সেনারা কেন্দ্রের ছাদে ‘বিস্ফোরক সদৃশ বস্তু স্থাপন করেছে।’
গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে তিনি জানিয়েছে, পারমাণবিক কেন্দ্রের কয়েকটি পাওয়ার ইউনিটে এসব বিস্ফোরক স্থাপন করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে এ ‘ঝুঁকিপূর্ণ উস্কানির’ ব্যাপারে অবহিত করেন জেলেনস্কি। তিনি জানান, ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, ‘আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করে এ বিষয়টি সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণে’ রাখার ব্যাপারে কাজ করবেন তিনি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিনা বাধা ও রক্তপাতে ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক কেন্দ্রটি দখল করে নেয় রাশিয়া। এরপর দুই পক্ষই একে-অপরের বিরুদ্ধে কেন্দ্রটিতে গোলাবর্ষণের অভিযোগ করেছে। আর এই গোলাবর্ষণের কারণে সেখানে পারমাণবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা গিয়েছিল।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কয়েকদিন ধরে হামলার সতর্কতা দিয়ে আসলেও, রাশিয়া উল্টো দাবি করছে ইউক্রেনীয়রাই সেখানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাশিয়ার পারমাণবিক নেটওয়ার্ক পরিচালনাকারী সংস্থা রোসেনাগোয়াতোমের পরিচালকের পরামর্শক রেনাত কার্চা বলেছেন, ‘৫ জুলাই রাতের আঁধারে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালানোর চেষ্টা করবে। এতে তারা দূরপাল্লার অস্ত্র ও কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করবে।’ তবে এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি তিনি।
মঙ্গলবার ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে। তারাও পারমাণবিক কেন্দ্রের ছাদে বিস্ফোরক স্থাপনের কথা জানিয়েছে।
বিবৃতিতে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী বলেছে, ‘যদি বিস্ফোরকগুলো বিস্ফোরিত হয়, সেগুলো রিয়েক্টর ধ্বংস করবে না, কিন্তু এমন একটি চিত্র তৈরি করবে, দেখে মনে হবে ইউক্রেনীয়রা গোলাবর্ষণ করছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘যে কোনো পরিস্থিতিতে কাজ করতে প্রস্তুত আছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।’
এর আগে শুক্রবার ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করে, পারমাণবিক কেন্দ্র উড়িয়ে দেওয়ার মিশন অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়া এবং ছয়টি ইউনিটের চারটিতে মাইন পুঁতেছে তারা।
সংস্থাটি আরও জানায়, পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে রাশিয়া তাদের সৈন্য সংখ্যা কমিয়ে নিচ্ছে।