কটু গন্ধে শ্বাস নেওয়াই দায়। হাসপাতালের ছাদে উঠলে গা গুলিয়ে উঠবে। খোলা ছাদে সার দিয়ে পড়ে পচাগলা মানুষের মৃতদেহ। দেহগুলোর কোনও কোনওটা আবার গলতে শুরু করেছে। এমনই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখা গেছে পাকিস্তানেরমুলতানের এক হাসপাতালের ছাদে।
এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। কেউ বলছেন, ছাদে মৃতদেহের সংখ্যা ২০০। আবার কারও কারও দাবি, সংখ্যাটি ৫০০–এর বেশি। এত বিকৃত দেহ কোথা থেকে কীভাবে এল সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাঞ্জাব প্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ ইলাহি এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি বসিয়েছেন। ছয় সদস্যের কমিটি তৈরি হয়েছে।
পাঞ্জাবের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও শিক্ষা সচিবের কাছ থেকে এর জবাব তলব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ ইলাহি। তিনি বলেন, মৃতদেহগুলোকে ছাদে ফেলে রেখে অমানবিক কাজ করা হয়েছে। এর জন্য দায়ী কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যদিও বক্তব্য, এগুলো বেওয়ারিশ দেহ। হাসপাতালের মর্গে দীর্ঘদিন ধরে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা ছিল। ময়নাতদন্ত হয়ে যাওয়ার পরে সেগুলোর মর্গের ফ্রিজারে রাখা হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালের একটি ফ্রিজার কাজ করছে না, তাই এই পুরনো দেহগুলো রাখার জায়গা হয়নি। সেগুলো তাই হিমঘরের ছাদের ওপরে রেখে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, দেহগুলোকে এইভাবে ফেলে রাখার উদ্দেশ্য ছিল না। বাধ্য হয়েই রাখতে হয়েছে। তার বক্তব্য, প্রয়োজন হলে দেহগুলো এমবিবিএস ছাত্রদের অ্যানাটমি ক্লাসের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
মুলতানের নিশতার মেডিক্যাল কলেজের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনায় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। অনেকেই এই মৃতদেহগুলো কার এবং সেগুলো কোথা থেকে এল, তা নিয়ে প্রশ্ন করা শুরু করেছেন।’
শতাধিক দেহ ছাদে ফেলে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এর পেছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল কিনা সে প্রশ্নও উঠেছে। এই ঘটনার যথাযথ তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।