মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পট আমূল পাল্টে যাওয়ার পর দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, আজ যা ঘটেছে তা নিয়ে সেনাবাহিনীর কিছুই করার নেই। রোববার পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল বাবর ইফতিখার এই মন্তব্য করেছেন বলে জিও নিউজ জানিয়েছে।
রোববার পাকিস্তানে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জেনারেল বাবর ইফতিখার তা স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেন এবং বলেন, একেবারে না।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার পর আইএসপিআরের মহাপরিচালক চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে এসব কথা বলেছেন।
এর আগে, সকালের দিকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার কাসিম শাহ সুরি। বিরোধীদের এই অনাস্থা প্রস্তাব সংবিধানের পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে রোববার সেটি খারিজ করে দেন তিনি।
পার্লামেন্টে অধিবেশন শুরুর পর পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে কথা বলেন। এ সময় তিনি দেশটির সংবিধানের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বিরোধীদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যহীনতার অভিযোগ তোলেন।
পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে বলে যে অভিযোগ তুলেছিলেন, তার পুনরাবৃত্তি করেন ফাওয়াদ চৌধুরী। তিনি বলেন, এই ষড়যন্ত্রের পেছনে বিদেশি রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি এই অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে ডেপুটি স্পিকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান।
তার বক্তৃতার পরপর পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি বলেন, অনাস্থা প্রস্তাব গত ৮ মার্চ উপস্থাপন করা হয়েছিল এবং এটি আইন ও সংবিধান অনুযায়ী হওয়া উচিত। তিনি বলেন, কোনো বিদেশি শক্তিকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত করতে দেওয়া হবে না।
তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী যে যুক্তি তুলে ধরেছেন, সেটি বৈধ বলেও মন্তব্য করেন সুরি। এরপর অনাস্থা ভোট খারিজ করে দিয়ে সংসদের অধিবেশন মূলতবি ঘোষণা করেন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ায় এখন আগামী ৯০ দিনের মধ্যে দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।