ওয়ানডে সুপার লিগে তিন নম্বরে থেকে বিশ্বকাপে আসা বাংলাদেশ দল যেন ক্রিকেটটাই ভুলে গিয়েছে। বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জয়ের পর জয় শব্দটাই যেন দেখতে পাচ্ছে না টাইগাররা। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে টানা পাঁচ ম্যাচ হারার পর আজ কলকাতায় পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। নতুন প্রতিপক্ষ পেলেও ফলাফল বদলাতে পারেনি টিম টাইগার্স। ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের দেওয়া ২০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দাপটের সঙ্গে ১০৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে পাকিস্তান। বড় ব্যবধানে লজ্জার এই হারের ফলে টানা ছয় ম্যাচ হারল সাকিবের দল।
বাংলাদেশের দেওয়া ২০৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় দুই ওপেনার ফখর জামান ও আব্দুল্লাহ শফিক। তাদের শত রানের জুটিতে সহজেই জয়ের ভীত পেয়ে যায় বাবর আজমের দল। নিজের অর্ধশতক পূরণ করে শফিক সাজঘরে ফিরে গেলেও এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকেন ফখর। মিডেল ওভারে মেহেদী হাসান তিন উইকেট পেলেও ম্যান ইন গ্রিনদের জয়ের পথে তা বাধা হতে পারেনি।
এর আগে কলকাতায় টসে জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ওয়ানডে বিশ্বকাপের এবারের আসরে টাইগারদের টপ অর্ডার মানেই পাওয়া প্লেতে সাজঘরে ফিরে যাওয়া। নিজেদের সপ্তম ম্যাচে এসেও বরাবরের মতো সেই ধারা আজ অব্যাহত রেখেছে টিম টাইগার্স।
পাওয়ার প্লেতে ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি লাল-সবুজ দলের। প্রথম ওভারেই সাজঘরে ফিরেছেন ওপেনার তানজিদ তামিম। এরপর ক্রিজে এসে দাঁড়াতেই পারেননি টপ অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। মাত্র ৩ বলে খেলে ৪ রান করে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নের পথে। এই টপ অর্ডারই শাহিন শাহ আফ্রিদির শিকার হয়েছেন। দলীয় ৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেছেন ওপেনার লিটন দাস ও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই দুই ডানহাতি ব্যাটার মিলে ব্যাটিং বিপর্যয় সামাল দিয়েছেন। পাকিস্তান বোলারদের দেখেশুনে খেলেছেন তারা।
মিডেল ওভারে (১১-২০) কোন উইকেট না হারিয়ে তুলেছেন ৫৯ রান। দুই ব্যাটারের জুটিতে ২১তম ওভারেই দলের শতরান পূরণ হয়েছে। তবে হঠাৎ ইফতিখার আহমেদের বলে বাজে এক শট খেলে ৬৪ বলে ৪৫ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন লিটন।
লিটন ফিরে গেলেও নিজের অর্ধশতক তুলে নেন অভিজ্ঞ রিয়াদ। তবে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলার পর ৫৬ রান করে আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন সাইলেন্ট কিলার। রিয়াদের পর ক্রিজে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়। মাত্র ৭ রান করে ফিরেছেন ওসামা মীরের ঘূর্ণিতে।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়েন সাকিব। তাদের ৪৫ রানের জুটি ভাঙেন পেসার হারিস রউফ। ৬৪ বলে ৪৩ রান করে সাজঘরে ফিরেন টাইগার অধিনায়ক। শেষ দিকে মিরাজের ২৪ রানের ইনিংসে স্কোরবোর্ডে ২০০ রান তুলে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানি পেসারদের বোলিং তোপে নির্ধারিত ৫০ ওভারের আগেই ২০৪ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন রিয়াদ।