ক্ষমতাচ্যুত হলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে হেরে গেলেন তিনি। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের পতন হলো মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই। তবে ইমরান খানের পর কে এখন পাকিস্তানের হাল ধরবেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
পাকিস্তানের পরিবর্তে সিংহাসনে বসতে পারেন বিরোধীদলীয় নেতা ও পাকিস্তান মুসলিম লিগের (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ। পাঞ্জাব প্রদেশের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে ১৭৪টি ভোট পড়ে শনিবারের (৯ এপ্রিল) ঐতিহাসিক অনাস্থা ভোটে। ইমরান সরকারের পতন হওয়ার পর প্রধান বিরোধী দলনেতা শাহবাজ শরিফকে অভিনন্দন জানান সদ্য স্পিকারের আসনে বসা আয়াজ সাদিক। ধারণা করা হচ্ছে এই শাহবাজই পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন।
শাহবাজের পুরো নাম মিয়া মোহাম্মদ শাহবাজ শরিফ। অনাস্থা ভোটে ইমরানকে গদিচ্যুত করার পর শাহবাজকে কিছু বলার অনুরোধ করা হয়। অ্যাসেম্বলিতে গলা উঁচিয়েই শাহবাজ বলেন, কোনোমতেই বদলার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না তিনি। এই ফল পাকিস্তানের জনগণের ইচ্ছেতেই হয়েছে। পাকিস্তানে সুদিন ফিরতে চলেছে বলেও মন্তব্য করেন, প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে এগিয়ে থাকা শাহবাজ।
বড়ভাই নওয়াজ দেশ ছাড়ার পর পাকিস্তান মুসলিম লিগের প্রেসিডেন্টের আসনে বসেন শাহবাজ। তখন থেকেই ভাইঝি মরিয়াম শরিফকে নিয়ে দল সামলান তিনি। ২০১৮ সালে তিনি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য হন।
৭০ বছর বয়সী শাহবাজ জন্মগ্রহণ করেন লাহোরে। ধনী ব্যবসায়ী পরিবারের জন্ম নেওয়া শাহবাজ পড়াশোনা করেন পাকিস্তানেই। এরপর পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন তিনি। জানা গেছে, বর্তমানে পাকিস্তানের একটি ইস্পাত কারখানায় যৌথ মালিকানা রয়েছে তার।
শাহবাজের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। প্রথমবার পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে কারারুদ্ধ হন শাহবাজ। এরপর সৌদি আরবে নির্বাসনে পাঠানো হয় তাকে। ২০০৭ সালে নিজ দেশে ফেরেন শাহবাজ। আবার সক্রিয় হন রাজনীতিতে। ২০০৮ সালে নির্বাচনে জিতে ফের পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। সর্বশেষ ২০১৩ সালে তৃতীয় মেয়াদে শাহবাজ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন।