পাকিস্তানের রুপির অবনমন অব্যাহত রয়েছে। আর এতেই কার্যত তলানিতে ঠেকেছে পাকিস্তানি রুপির দর। ইতিহাসে এর আগে কখনও পাকিস্তানের এই মুদ্রার মান এতো নিচে নামেনি। বুধবার (১১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার এক ধাক্কায় ৮২ পয়সা কমে গেছে পাকিস্তানি রুপির মান। আন্তঃব্যাংক বাজারে প্রতি ডলারের বিপরীতে মিলছে ১৮৮ দশমিক ৬৬ রুপি। এর আগে কখনো পাকিস্তানের মুদ্রার দর এতো নিচে নামেনি। ফরেক্স ডিলারদের দাবি, লাহোরের খোলাবাজারে এক ডলার পাকিস্তানের ১৮৯ রুপিরও বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের (এসবিপি) তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনের ভিত্তিতে পাকিস্তানি রুপি শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ বা ১ দশমিক ১৩ রুপি হারিয়েছে। অন্যদিকে আগের দু’টি সেশনে ১ দশমিক ৮৪ রুপি দাম বেড়েছে মার্কিন ডলারের।
দ্য ডন বলছে, ক্রমবর্ধমান বিনিময় হার পাকিস্তানের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। অনিয়ন্ত্রিত ভাবে আমদানি বৃদ্ধি এবং এর তুলনায় রপ্তানি বৃদ্ধির ধীর গতির কারণে ধারাবাহিকভাবে মূল্য হারাচ্ছে পাকিস্তানি রুপি।
মূলত রুপির এই মূল্যহ্রাস বাণিজ্য ঘাটতিতেও প্রতিফলিত হয়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তানে বাণিজ্য ঘাটতি পৌঁছেছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে।
পাকিস্তানের মুদ্রাবাজারের ডিলাররা বলছেন, ডলারের উচ্চ চাহিদার কারণেই মূলত মার্কিন এই মুদ্রার দাম বাড়ছে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডলারের ক্রমবর্ধমান এই মূল্য পাকিস্তানের অর্থনীতির ওপর ব্যাপক চাপ বাড়াতে পারে।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে পাকিস্তানে মাত্রই ক্ষমতায় এসেছে শেহবাজ শরীফের সরকার। প্রধানমন্ত্রী হয়েই শেহবাজ জানিয়েছিলেন, তার সরকার ইমরান-সরকারের মতো ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ হবে না।
পাকিস্তানের অর্থনীতির উন্নয়ন হবে বলেও তিনি দাবি করেছিলেন। কিন্তু এমন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে শেহবাজ সরকারের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো বেশ কঠিন বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।